
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের চার বিভাগের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ওই নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘আমার উচ্চশিক্ষা জীবন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে শুরু করেছিলাম। পরবর্তীতে কোন এক কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হই। যখন এখানে এলাম, শুরুতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে দীর্ঘ দিন অতিক্রম করতে হয়। সেই সময়ে হলে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী যারা ছিলেন, তারা নানাভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন। আজ ৩৫ বছর পর এসে এই মঞ্চ থেকে বলতে চাই, আমার সেই সিদ্ধান্তটি কেনভাবেই ভুল ছিল না। আজ এখানে অনেক শিক্ষার্থী আক্ষেপের কথা বলছেন, আমি চাই এই বক্তব্য আজই আপনার শেষ বক্তব্য হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গোটা জাতি গর্ব করে, এখানে আপনি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে এসেছেন। তাই সর্বপ্রথম নিজের প্রতি এবং দ্বিতীয়ত নিজের বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের সেরা প্রমাণের আহ্বান জানিয়ে কলা অনুষদের ডীন বলেন, ‘২১ শতকের বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে একে অন্যের সাথে যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। ভাষা শুধুমাত্র মনের ভাব বা অনুভূতিই প্রকাশ করে না পাশাপাশি ব্যক্তির স্বতন্ত্র পরিচয়ও প্রকাশ করে। এখানে যারা শিক্ষার্থীরা আছেন আমি তাদের উদ্দেশ্যে শুধু এই কথাটি বলব, যেখানে যে অবস্থায় আছেন না কেন সেটিকে আপনি ধারণ করুন এবং সর্বোচ্চ শ্রম ও মেধা দিয়ে নিজেকে সেরা প্রমাণের চেষ্টা করুন, আশা করি পৃথিবী আপনার সামনে উন্মুক্ত হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবছার কামাল বলেন, ‘আমরা নানা প্রতিবন্ধকতা শেষে অবশেষে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত আয়োজন করেছি। এইদিনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলতে চাই, চারটি বিভাগের যে শিক্ষার্থী এখানে এসেছেন, তারা নিজের আগ্রহ ও ইচ্ছাশক্তির কারণে এখানে ভর্তি হয়েছেন। একেকটি ভাষা, একেকটি জানালা; যার মাধ্যমে আমরা সারা পৃথিবী এক্সপ্লোর করতে পারি। এই বিদেশি ভাষাগুলোর চাহিদা অনেক, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষক চাচ্ছে কিন্তু পাচ্ছেন না। আমি শিক্ষার্থীদের বলব, আপানারা গুরুত্ব সহকারে এই ভাষাগুলো রপ্ত করুন, ল্যাংগুয়েজে দক্ষ হোন, অনেক সুযোগ আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’
এতে অন্যান্যদের মধ্যে ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক সাবরিনা আহমেদ চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. শামীম বানু, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুলসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
দ্বিতীয় পর্বে শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে জাপানি, ফরাসি, চীনা ও ইংরেজি ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে বিদেশি শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন, যা আয়োজনকে আরও বেশি বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি (জেএলসি), ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি (এফএলসি), চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি (সিএলসি) ও ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাঙ্গুয়েজ (ইসোল) বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর