
ইউসেপ বাংলাদেশ জেন্ডার ডাইভার্স কমিউনিটি এবং জুলাই ২০২৪ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যুবাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বিস্তৃত দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি উদ্বোধন করেছে। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো অংশগ্রহণকারীদের মানসম্মত কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষার সুযোগ প্রদান, যাতে তারা কর্মসংস্থান, আত্মমর্যাদা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি অর্জন করতে সক্ষম হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস. মুরশিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ, সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মোঃ সাইদুর রহমান খান, মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন ড. ওবায়দুর রব।
অতিথিরা কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত কেয়ারগিভিং, জাপানি ভাষা এবং গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স পরিদর্শন করেন এবং ইউসেপ বাংলাদেশের উইমেন্স কর্নার এর উদ্বোধন করেন। এই কর্মসূচি শুধু প্রশিক্ষণেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং অংশগ্রহণকারীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত করবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয় যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ইউসেপ বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ জন যুবক-যুবতীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করা হবে। এ উদ্যোগ আগামী দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, “ইউসেপ বাংলাদেশের এই উদ্যোগ সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য একটি মাইলফলক। দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের শুধু কর্মসংস্থান নয়, বরং মর্যাদা, অন্তর্ভুক্তি এবং জাতীয় অগ্রগতিতে সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব।”
বিশেষ অতিথি ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ বলেন, “ইউসেপ বাংলাদেশের এই কর্মসূচি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা আশা করি এই ধরণের উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে এবং দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে কার্যকর অবদান রাখবে।”
চেয়ারপার্সন ড. ওবায়দুর রব বলেন, “ইউসেপ বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে জেন্ডার ডাইভার্স কমিউনিটি, দক্ষতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এই কর্মসূচি আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করছে।”
ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. মোঃ আবদুল করিম যোগ করেন, “এটি শুধু কর্মসংস্থান তৈরির কর্মসূচি নয়; এটি মর্যাদা পুনঃস্থাপন, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ এবং কাউকে পিছিয়ে না রাখার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। সরকারী সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ইউসেপ বাংলাদেশ এই উদ্যোগ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সিভিল সোসাইটি প্রতিনিধি, ইউসেপ কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রশিক্ষণার্থী এবং মিডিয়ার সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত সবাই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য যৌথ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর