নেপালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে একাধিক এলাকায় কঠোর কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।
তবে কারফিউ জারির পরও কাঠমান্ডু উপত্যকায় তরুণদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সোমবারের রক্তক্ষয়ী ঘটনায় রাজধানী কাঠমান্ডুতে ১৭ জন ও ইটাহারিতে ২ জন নিহত হন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৪০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী।
নেপালি গণমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, মঙ্গলবারও নিউ বানেশ্বরসহ কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় তরুণরা বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা কোনো ব্যানার না নিয়েই জড়ো হন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, “গতকালের ঘটনা সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে। আমি তরুণ প্রজন্মের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।”
এদিকে চন্দ্রনিগাহাপুরেও নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক দফা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হতাহত বা গ্রেপ্তারের খবর এখনো নিশ্চিত হয়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে রিং রোডের ভেতর অনির্দিষ্টকালের কারফিউ ঘোষণা করে। বলকুমারী সেতু, কোঠেশ্বর, সীনামঙ্গল, গাউশালা, চাবাহিল, নারায়ণ গোপাল চৌক, গংগাবু, বালাজু, স্বয়ম্ভূ, কালিঙ্কি, বালখু ও বাগমতী সেতুও এ কারফিউয়ের আওতায় রয়েছে।
ললিতপুরে সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ রয়েছে। ভক্তপুরেও মাধ্যপুর ঠিমি, সূর্যবিনায়ক, চাংগুনারায়ণ ও ভক্তপুর পৌর এলাকায় চলাচল ও জমায়েত অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন আইন ১৯৭১-এর ধারা ৬(৩) অনুযায়ী সব ধরনের জমায়েত, মিছিল, সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সোমবারের ঘটনায় সরকারের কঠোর দমননীতির সমালোচনা করেছেন রাজনৈতিক নেতারা। বিরোধী দলসহ সমালোচকরা বলেন, এই রক্তক্ষয়ী ঘটনা সরকারের দমনমূলক অবস্থানকে স্পষ্ট করে দিয়েছে।
প্রজন্ম জেড-এর তরুণদের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন চলছে, যা প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সর্বশেষ খবর