
কিশোরগঞ্জ উপজেলার ছাদুরারপুল গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের চোখ ফাঁকি দিতে এক অভিনব কায়দায় বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হয়েছিল। বরের সঙ্গে আসল কনেকে ঘরে রেখে প্রাপ্তবয়স্ক এক তরুণীকে কনে সাজিয়ে স্টেজে বসানো হয়েছিল। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। এরপর বাল্যবিবাহ আয়োজনের দায়ে জরিমানা করা হয়েছে তিনজনকে। একই রাতে নিতাই ডাংগাপাড়া গ্রামে আরেকটি বাল্যবিবাহ পণ্ড করে কনের বাবাকে জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে ছাদুরারপুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত আসল কনেকে সরিয়ে এক প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে কনে সাজিয়ে স্টেজে বসানো হয়, যাতে বোঝানো যায় এটি বাল্যবিবাহ নয়। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট প্রীতম সাহার সন্দেহ হলে স্টেজে বসে থাকা তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তিনি স্বীকার করেন যে তিনি কনে নন এবং আসল কনে ঘরে আছেন। বাল্যবিবাহ হচ্ছে না বোঝানোর জন্যই তাঁকে বসানো হয়েছে।
এই ঘটনায় কনে সেজে বসে থাকা শামীমা আক্তার নামের মেয়েটিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাল্যবিবাহ আয়োজনের দায়ে কনের বাবা রুহুল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা এবং বর মোস্তাকিমের বাবা রফিকুলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে, একই রাতে নিতাই ডাংগাপাড়া গ্রামের মোস্তফা তাঁর মেয়ের বাল্যবিবাহের আয়োজন করেছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে গিয়ে বাল্যবিবাহটি পণ্ড করে দেন। এ ঘটনায় কনের বাবা মোস্তফাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
দুটি বিয়েতেই কয়েক শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনে এই জরিমানা করায় সচেতন মহলে ব্যাপক প্রশংসা শোনা গেছে। অনেকেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহার প্রশংসা করে বলেছেন যে এমন কর্মকর্তা থাকলে আর বাল্যবিবাহ হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রীতম সাহা ঘটনা দুটি নিশ্চিত করে বলেন, "অভিনব কায়দায় বাল্যবিবাহের আয়োজনে তিনজনের জরিমানা করা হয়েছে এবং অপর একটি বাল্যবিবাহের দায়ে আরও একজনের জরিমানা করা হয়েছে। দুটি বাল্যবিবাহই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর