
শরীয়তপুরে একটি একটি করে ধান দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে দুর্গা প্রতিমা। দেখলে মনে হবে এটি সোনা দিয়ে মোড়ানো। প্রতিমা দেখে বিস্মিত দর্শক ও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমায় চিরাচরিত রঙের কাজ বাদ দিয়ে আকর্ষণীয় ধানের প্রতিমা তৈরি হচ্ছে নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর এলাকার ঘোষপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মণ্ডপে। খুব সূক্ষ্মভাবে প্রতিমার গায়ে ধাপে ধাপে এক-এক করে বসানো হচ্ছে সোনালি ধান। প্রতিমা শিল্পীদের নিপুণ ছোঁয়ায় ধানের প্রতিমা হয়ে উঠেছে অনন্য শিল্পকর্ম। ভক্তদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হচ্ছেন।
জানা যায়, শরীয়তপুরে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতির জোর আয়োজন। দেশের নানা জেলায় জমকালো পূজার আয়োজন হলেও ব্যয়বহুল ও আকর্ষণীয় আয়োজনের দিক থেকে শরীয়তপুর অন্যতম। পূজা উপলক্ষে জেলার শতাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী মণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণের পাশাপাশি আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জায় যোগ হচ্ছে বিশেষ রঙ।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে পূজার মূল কর্মসূচি। এ বছর জেলায় মোট ১০১টি মন্দির ও মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছে নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ধাম দুর্গা মন্দির। সেখানে তৈরি হচ্ছে ব্যতিক্রমী এক প্রতিমা—যার মূল উপাদান সোনালি ধান।
প্রায় আট ফুট উচ্চতার এই ধান বসানো প্রতিমা গড়তে লাগবে প্রায় এক মণ ধান। দীর্ঘ আড়াই মাসের শ্রমে প্রতিমাটি গড়ে তোলা হচ্ছে, আর বর্তমানে চলছে গায়ে ধান বসানোর শেষ কাজ।
নারায়ণগঞ্জ থেকে বিয়াই বাড়িতে বেড়াতে আসা মধুসূদন ঘোষ বলেন, বিয়াই বাড়িতে বেড়াতে এসে শুনি এইখানে ভিন্নভাবে দুর্গামায়ের প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। তাই দেখতে এসেছি। ধানের প্রতিমা এর আগে কখনো দেখিনি। ভিন্নধর্মী এই প্রতিমা দেখে বেশ ভালো লাগছে।
উষান ঘোষ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতসহ অনেক জায়গায় পূজা দেখেছি, কিন্তু এতো সুন্দর প্রতিমা দেখিনি। এটার কাজ সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। ধানের তৈরি প্রতিমা দেখে আমি মুগ্ধ।
প্রধান প্রতিমা শিল্পী রাজিব সরদার বলেন,আমরা সব সময় মাটি আর রঙ তুলির আচরে প্রতিমা বানালেও এ বছর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ধান দিয়ে প্রতিমা বানাচ্ছি। যা এই অঞ্চলে এর আগে কেউ বানায়নি।
মন্দির কমিটির সভাপতি গোপাল ঘোষ বলেন, আমরা সবসময় আমাদের মন্দিরে ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করতাম। এ বছর ধানের প্রতিমা নির্মাণ করা হচ্ছে, যা এর আগে ফরিদপুর অঞ্চলে বানানো হয়নি। আমরা আশা করছি, এ বছর ধানের প্রতিমা দেখতে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম ঘটবে।
জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, পূজামণ্ডপের জন্য প্রয়োজনীয় পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। তারা নিশ্চিন্তে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন। কাউকে কোথাও কোন সমস্যা করতে দেওয়া হবে না।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর