
এক আফগান কিশোর উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ারের (চাকার বক্স) ভেতর লুকিয়ে কাবুল থেকে ভারতের দিল্লি পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টার যাত্রার পর অক্ষত অবস্থায় নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে পৌঁছেছে ১৩ বছরের ওই কিশোর।
তবে ওই আফগান কিশোর ভারত নয়, যেতে চেয়েছিল ইরানে। এ লক্ষ্যে গত রোববার ভোরে সে গোপনে কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেছে। তারপর সবার চোখ এড়িয়ে যাত্রীদের একটি দলের সঙ্গে রানওয়েতে চলে যায়। সেখানে সে কেএএম এয়ারের উড়োজাহাজের চাকা রাখার বক্সের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। তার কাছে শুধু লাল রঙের একটি অডিও স্পিকার ছিল।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানান, তারা রানওয়েতে সাদা রঙের কুর্তা-পায়জামা পরা একটি কিশোরকে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখেন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই কিশোরের কাবুল থেকে দিল্লি পর্যন্ত দুঃসাহসিক যাত্রা সম্পর্কে জানা যায়।
পরে সেদিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে কাবুলগামী একটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) এক কর্মকর্তা বলেন, ওই কিশোর আফগানিস্তানের কেএএম এয়ারের কাবুল থেকে দিল্লিগামী একটি উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে গোপনে উঠে পড়ে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সেটি দিল্লি পৌঁছায়।
কিশোর বেরিয়ে আসার পর উড়োজাহাজটিতে প্রথমে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হয়। পরে প্রকৌশলীরা সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না, তা পরীক্ষা করেন। পেছনের ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সে ছোট লাল রঙের একটি অডিও স্পিকার পাওয়া যায়।
কর্মকর্তারা জানান, এই ধরনের বিপজ্জনক যাত্রায় ঠান্ডা ও অক্সিজেনের অভাবে মাঝ আকাশে ওই কিশোরের মৃত্যুও হতে পারত। বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে ওড়ে। ওই উচ্চতায় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এ ছাড়া উড়োজাহাজ যখন অত উঁচুতে ওড়ে, তখন প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হয়।
উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে লুকিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এমন ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি ৭৭ শতাংশের বেশি। এফএএর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ কাজ করতে গিয়ে ১৯৪৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর