
ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দেবীপুর হিন্দু পাড়ায় সালিশি বৈঠকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তিনজনকে আহত করা হয়েছে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে কয়েকজন পাশের যুবদল কার্যালয়ে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা যুবদল কার্যালয়েও হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ১৫-২০ জন বহিরাগত এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইউনিয়ন যুবদলের কার্যালয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। যুবদল কার্যালয়ের পাশের দোকানে সালিশি বৈঠক বসেছিল। বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই ইয়াছিন ভূঁইয়ার ছোট ভাই রুবেল ১৫-২০ জন দুর্বৃত্ত নিয়ে হামলা চালায়। ইয়াছিন ও রুবেল—দুই ভাই শনিবার মালদ্বীপ থেকে দেশে আসে। হামলায় আহত প্রবাসী নয়ন জানান, ইয়াছিন ভূঁইয়া, রুবেল ও জামাল উদ্দিন স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান জানে আলমের সহযোগী ছিলেন। তারা তিন ভাই এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে জিম্মি করে রাখার অভিযোগও করেন। এখনো তারা এলাকায় বিভিন্নভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। ২০২৩ সালে যুবদল নেতা জাফর আহমদ মানিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে রুবেলের নেতৃত্বে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছিল।
ইব্রাহিম খলিল নয়ন জানান, ২০২৩ সালে ইয়াছিন ভূঁইয়ার মাধ্যমে তিনি মালদ্বীপ যান। মালদ্বীপ নেওয়ার সময় যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল, সেই কাজ তিনি পাননি। পরে তিনি লেবার হিসেবে কাজ করেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ইয়াছিন কৌশলে তার এক লোক দিয়ে সেখানে নয়নের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় তিনি মালদ্বীপে তিন মাস জেল খেটে দেশে চলে আসতে বাধ্য হন। পরে ইয়াছিনের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তিনি সালিশি বৈঠক করার কথা বলেন। সেই মোতাবেক ঘটনার রাতে পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকে ইয়াছিনের ভাই রুবেলের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন বহিরাগত দুর্বৃত্ত নয়নের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করে। এ সময় নয়ন আত্মরক্ষার জন্য পাশের ইউনিয়ন যুবদলের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। দুর্বৃত্তরা যুবদল কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় দোকানের মালিক জানান, সালিশি বৈঠক শুরু হলে কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে বহিরাগতরা এসে হামলা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। জেলা যুবদলের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন খন্দকার জানান, ওই এলাকায় বিদেশে লোক পাঠানো সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সালিশি বৈঠকে হামলার খবর তিনি শুনেছেন।
এ সময় আত্মরক্ষায় যুবদলের কার্যালয়ে আশ্রয় নিলে বহিরাগতরা পাশের যুবদলের কার্যালয়ে হামলা করেছে বলে স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীরা তাকে জানিয়েছেন। যেহেতু হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, সেহেতু পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে। ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান জানান, বিদেশ পাঠানো সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সালিশি বৈঠকে কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। যুবদল কার্যালয়ে ভাঙচুরের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর