
প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের ফোন আমাদের হাতের কাছেই একটা এক্সটেনশনের মতো। সকালের ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে সন্ধ্যার শেষের দিকে ভিডিও কল পর্যন্ত, স্ক্রিন আমাদের জীবন দখল করে নেয়।
কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে এই আচরণ আমাদের ত্বকের ওপর কতটা প্রভাব ফেলে? গবেষণা ইঙ্গিত করে যে, ফোন এবং অন্যান্য ডিভাইস থেকে আসা নীল আলো ত্বকের বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করতে পারে, যার ফলে বলিরেখা, দাগ এবং ত্বকের নিস্তেজ ভাব দেখা দেয়।
আপনার ফোন কীভাবে আপনার ত্বককে বৃদ্ধ করে তুলতে পারে তা আপনি টেরও পারবেন না। আমাদের ত্বক প্রাকৃতিক পরিবেশগত চাপের সংস্পর্শে আসে যেমন সূর্যালোক এবং দূষণ, কিন্তু ফোন অতিরিক্ত ক্ষতির কারণ হয়: হাই-এনার্জি ভিজিবল (HEV) আলো বা নীল আলো। সূর্য থেকে নির্গত হয় UV রশ্মি, অপরদিকে নীল আলো ডিজিটাল ডিভাইস দ্বারা উৎপন্ন হয়।
গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, ক্রমাগত এক্সপোজার কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে কোলাজেন ক্ষয় হয় এবং বার্ধক্য দ্রুত হয়।
যদি আপনার ত্বকের রঙ এই লক্ষণগুলি প্রদর্শন করতে শুরু করে, তাহলে আপনার ফোন এক্ষেত্রে দায়ী হতে পারে। এখানে কয়েকটি স্পষ্ট লক্ষণ রয়েছে:
হাইপারপিগমেন্টেশন: কালো দাগ, বিশেষ করে গাল এবং কপালে।
বলিরেখা: কোলাজেন ক্ষয়ের প্রাথমিক লক্ষণ।
নিস্তেজ এবং শুষ্কতা: ভালো ঘুম সত্ত্বেও ত্বক ক্লান্ত দেখা দেয়।
বর্ধিত সংবেদনশীলতা: লালচেভাব, জ্বালা এবং অসম ত্বকের রঙ।
নীল আলো কেন গুরুত্বপূর্ণ
নীল আলো UVA এবং UVB রশ্মির চেয়ে বেশি গভীরে প্রবেশ করে, ত্বকের ডার্মিসে, যেখানে ইলাস্টিন এবং কোলাজেন থাকে। দীর্ঘক্ষণ ধরে এক্সপোজার এই বেসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ত্বকের বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে। যদিও সূর্যের ক্ষতি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, নীলচে আলোর প্রভাব কম স্পষ্ট কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে, তাই এটি ডিজিটাল বার্ধক্যের একটি নীরব কারণ।
ত্বককে রক্ষা করার সহজ সমাধান
নীলচে আলোর দীর্ঘক্ষণ এক্সপোজারের কারণে ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখানে কয়েকটি বিশেষজ্ঞ-অনুমোদিত উপায় রয়েছে:
১. ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
বেশিরভাগ সমসাময়িক সানস্ক্রিন UV বিকিরণের পাশাপাশি HEV আলো ফিল্টার করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আপনি যদি ঘরে থাকেন তবে প্রতিদিন সানস্ক্রিন প্রয়োগ নিশ্চিত করুন।
২. নীল আলোর স্ক্রিন প্রোটেক্টর ব্যবহার করুন
বিশেষ ফিল্টার এবং টেম্পারড চশমা রয়েছে যা আপনার ডিভাইস থেকে ক্ষতিকারক নির্গমন কমায়। ত্বককে রক্ষা করার জন্য আপনি সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্কিনকেয়ার ব্যবহার করুন
ভিটামিন সি, নিয়াসিনামাইড এবং গ্রিন টি নির্যাস অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সারিয়ে তোলে।
৪. ডিজিটাল লিমিটেশন
যতটা সম্ভব নানা ধরনের ডিভাইস ব্যবহার সীমিত করুন। যেগুলো ব্যবহার না করলেই নয়, সেগুলোতে সময় দিন। তবে অকারণে ফোন স্ক্রল করা কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়া বা ওটিটি প্লাটফর্ম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
৫. ডিভাইস সেটিংস পরিবর্তন করুন
এক্সপোজার কমাতে আপনার ফোনে নাইট মোড বা নীলচে আলো ফিল্টার চালু করুন। এতে ত্বক তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর