
গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য, ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী বহনকারী আন্তর্জাতিক মানবিক নৌ-অভিযান গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ওপর ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)। সেখানে তারা বলেন, গাজা উপত্যকাকে ইসরায়েল মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের (ইউটিএল) শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও মানবাধিকারকর্মীরা একত্রিত হয়ে এই আক্রমণের প্রতিবাদ জানায়।
মানববন্ধনে ইউটিএলের সদস্য ড. মো. কামরুল হাসান বলেন, বিশ্ববিবেক আজ নিশ্চুপ রয়েছে। বিশ্ব সংস্থাগুলো প্রত্যাশা অনুযায়ী এগিয়ে আসছে না। গাজা উপত্যকাকে ইসরায়েল মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। সুমুদ ফ্লোটিলা বিশ্ববিবেককে জাগিয়ে তোলার জন্য, বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা চাই বিশ্ব মানবতা জেগে উঠুক যেন আর কোনো শিশু, আর কোনো মা রক্তে ভেসে না যায়। ইসরায়েলের এই বর্বরতা থামাতে হবে।
বক্তৃতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষ কেবল মুসলমান বলেই আজ তাদের ওপর ইসরায়েল অমানবিক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এটি মানবতার জন্য চরম লজ্জাজনক একটি অধ্যায়। একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হয়েও ইসরায়েল আজ সারা পৃথিবীকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
তিনি সুমুদ ফ্লোটিলার প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেন, কিছু মানুষ সামান্য খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে, অথচ ইসরায়েল সেটিও সহ্য করতে পারছে না। তারা এই মানবিক উদ্যোগকে বন্ধ করে দিয়েছে। আজ প্রশ্ন জাগে—কোথায় জাতিসংঘ? কোথায় ওআইসি?
ঢাবি প্রফেসর ড. মো. আবু সায়েম বলেন, দুই বছর ধরে গাজার মুসলমান ভাই-বোনদের ওপর ইসরায়েল যে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে তা অকল্পনীয়। মুসলিম বিশ্ব আজ নিশ্চুপ, যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। মানবতা ঘুমিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, যে চুক্তি ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা কার্যকর হলে তাদের স্বাধীন আবাসভূমির স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমি সেই চাপিয়ে দেওয়া চুক্তির তীব্র সমালোচনা করছি। বরং দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সহাবস্থানই এই সংকটের একমাত্র সমাধান হতে পারে।
মানববন্ধনে প্রফেসর এইচ এম মোশাররফ হোসেন বলেন, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে। এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পথে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সক্রিয় হতে হবে।
এসময় মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন ইউটিএল-এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এবং উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল আমিন। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আ. খ. ম. ইউনূস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এম বরকত আলী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু লায়েক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্মতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আবু সায়েম, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর