
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক হতদরিদ্র বৃদ্ধ দম্পতির জীবনে অমানবিক আতঙ্ক নেমে এসেছিল—মাত্র এক হাজার টাকার পাওনা না দেওয়ায় স্থানীয় যুবক সুরুজ মিয়া তাদের একমাত্র মাথাগোঁজার ঘরের ১০–১২টি টিন জোরপূর্বক খুলে নিয়ে যায়। বৃষ্টি-ঝড়ের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাতে হয়েছিল ষাটোর্ধ্র বৃদ্ধ দম্পতিকে। পরে সেই যুবক সুরুজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিষয়টি সকালে নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ইয়াকুব আলী সঙ্গীয় ফোর্সসহ সুরুজ মিয়াকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন। অভিযুক্তের কাছ থেকে উদ্ধার করা টিনগুলো পুনরায় বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২ অক্টোবর ‘বিডি২৪লাইভ’-এ প্রকাশিত ‘এক হাজার টাকার জন্য বৃদ্ধের ঘরের টিন খুলে নিল পাওনাদার’ শিরোনামের সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। খবরটি নজরে আসার পরই নড়ে চড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের রূপনাথপুর গ্রামে মাত্র এক হাজার টাকার পাওনা না পেয়ে স্থানীয় যুবক সুরুজ মিয়া ষাটোর্ধ মতিয়ার রহমানের বসতঘরের ছাউনি থেকে ১০-১২টি টিন খুলে নিয়ে যান। এতে বৃদ্ধ দম্পতি বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছিলেন। ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তৎপর হয়। পরে সুরুজকে গ্রেপ্তার করে টিনগুলো উদ্ধার করে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে ফেরত দেয়।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপকে সাদুল্লাপুরের জনসাধারণ স্বাগত জানিয়েছেন। এলাকার মানুষ মনে করেন, ছোটখাটো পাওনার জন্য বৃদ্ধ দম্পতির মাথাগোঁজার জায়গা বিপন্ন করা যে কতোটা নৃশংস ছিল, তা শুধু ঘটনার প্রতিবেদন পড়ে বোঝা যায় না—জীবন অভিজ্ঞতায় প্রত্যক্ষ করতে হয়।
স্থানীয়রা আরও বলেছেন, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিলে সমাজে মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখা সম্ভব। পুলিশের সক্রিয়তা ও সঠিক পদক্ষেপ বৃদ্ধ দম্পতির জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন আশা প্রকাশ করে জানান, ভবিষ্যতেও এমন ন্যায়পরায়ণ পদক্ষেপের মাধ্যমে অপরাধ দমন হবে এবং ক্ষুদ্র পাওনা বা ব্যক্তিগত বিবাদে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিপন্ন হবে না।
সর্বশেষ খবর