• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৬ ঘন্টা পূর্বে
জিসান নজরুল
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৪৪ রাত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদোন্নতির অভিযোগ

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে অসত্য তথ্য দিয়ে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক ড. বখতিয়ার হাসানকে তথ্য বিকৃত করে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর শিক্ষকতা অথবা স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষকতা এবং অনুমোদিত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষণার অভিজ্ঞতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে ০১ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ মোট ০৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। তবে অভিযোগ অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডকে (ডিএসই) উচ্চ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখিয়ে ড. বখতিয়ারের ‘চাকরি গণনা’র সুপারিশ করেছে বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি।

এর ভিত্তিতে তাকে প্রভাষক হওয়ার মাত্র ১০ মাস ২৮ দিনের মাথায় সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়েছে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি. এবং তথ্য ও এর তথ্য ও গবেষণা বিভাগ কোনো অনুমোদিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান নয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান। ফলে ড. বখতিয়ারের পদোন্নতি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্সের পরিপন্থী বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল ড. বখতিয়ার হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এর এক মাস পর, ওই বছরের মে মাসে তিনি চাকরির অভিজ্ঞতা গণনার জন্য আবেদন করেন। পরে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির আবেদন জানান। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ তাকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তিনি পদোন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করেন নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড. বখতিয়ারের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির বিষয় নিয়ে ২০১৪ সালের ১৭ মে বিভাগটির তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে প্ল্যানিং কমিটির সভা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগটির সহযোগী অধ্যাপক ড. সুতাপ কুমার ঘোষ ও প্রভাষক ড. বখতিয়ার হাসান নিজে।

সভা শেষে বিভাগটির সভাপতির স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, প্রভাষক হিসেবে যোগদানের জন্য বখতিয়ার হাসান তার চাকরির অভিজ্ঞতা গনণা বিষয়ে পূর্বতন প্রতিষ্ঠানের চাকরির অভিজ্ঞতা ও বেতন স্কেলের সনদপত্রসহ একটি আবেদন করেছেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বখতিয়ার হাসান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডে ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত (মোট ৪ বছর ২ মাস ৩ দিন) গবেষণা ও তথ্য বিভাগে জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (গবেষণা) পদে কর্মরত ছিলেন। যেহেতু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড একটি ফাইন্যান্স-বিষয়ক উচ্চ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, তাই তার চাকরির অভিজ্ঞতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক চাকরি গণনা করার সুপারিশ করা হয়।

অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির শর্ত হলো, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অথবা স্নাতক সম্মম্মান/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষকতা/ অনুমোদিত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষণার অভিজ্ঞাতা অথবা শিক্ষকতা এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে ০১ (এক) বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ সর্বমোট ০৩ (তিন) বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট দাখিল করতে হবে।

তবে ড. বখতিয়ারের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডে গবেষণা কাজের অভিজ্ঞতার থাকলেও এটি অনুমোদিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট নীতিমালার শর্ত পূরণ হয় নি বলে জানা গেছে। তবুও এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি ২০১৫ সালের ৩ মার্চ সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান এবং সে অনুযায়ী সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এমনকি পরবর্তীতে তিনি এ অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য অভিজ্ঞতা দেখিয়ে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান এবং সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এছাড়াও, চলতি বছরের ১২ মার্চ তিনি একই অভিজ্ঞতা দেখিয়ে অধ্যাপক পদেও পদোন্নতির জন্য আবেদন করেন। শিগগিরই তার পদোন্নতির বোর্ড হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে তৎকালীন বিভাগীয় প্লানিং কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক অধ্যাপক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অধ্যাপক বলেন, “ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো জাতীয় পর্যায়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান নয়। একে ‘গবেষণা প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে দেখিয়ে অভিজ্ঞতা গণনা করা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ঘটনায় বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি ও তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এর দায় এড়াতে পারে না।

এছাড়া ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বোর্ডের এক সভায় বিশেষজ্ঞ সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ ওঠে ড.  বখতিয়ারের বিরুদ্ধে। পরে তদন্ত কমিটি অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির ২৬২তম সিন্ডিকেট সভায় তাঁকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অবনমন করে প্রভাষক পদে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে হাইকোর্ট মৌখিকভাবে ওই শাস্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় এবং তাঁকে পূর্বের পদে পুনর্বহাল করতে বলে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, “তৎকালীন সময়ে নিয়ম মেনেই বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি ও সিন্ডিকেটের যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আমাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। দেশের একমাত্র ফাইন্যান্স বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আমি গবেষণা করেছি, এবং আমার কয়েকটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। এখন আপনারা যা দেখেন, যা পারেন করেনÑএ বিষয়ে আমার আর কোনো মন্তব্য নেই। আমার সামনে প্রমোশন রয়েছে, হয়তো সেটিই কিছু লোকের সহ্য হচ্ছে না।”

এদিকে চিঠিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লিমিটেডকে কেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করা হয়েছে জানতে চাইলে তৎকালীন বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, ‘তিনি চাকরি গণনার জন্য আবেদন করেছেন। প্ল্যানিং কমিটির সভায় সকল শিক্ষক তার বিষয়ে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে সেটি চিঠিকে আকারে প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়। পরে প্রশাসন তাকে পদোন্নতি দেন। যেহেতু আমি বিভাগের সভাপতি ছিলাম, চিঠিতে আমার স্বাক্ষর ছিল।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিএসই কোন গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমোশনের ক্ষেত্রে এটি গণনার সুযোগ নেই। যদি কেউ এর অভিজ্ঞতা দিয়ে সুবিধা নিয়ে থাকে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]