
মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহক প্রতিবাদ জানিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিলে অবশেষে কেটে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে ঘটনাটি জানান ভুক্তভোগী তারেক শিকদার।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “মোবাইল কোম্পানির ডাকাতি, অতঃপর টাকা উদ্ধার! আমি জীবনে কখনো সিম কিনিনি। ২০ বছর আগে পরিবার আমাকে একটি রবি (তৎকালীন একটেল) সিম কিনে দিয়েছিল, সেটিই এখনও ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক সময়ে খেয়াল করলাম, আমার মোবাইল ব্যালেন্স দ্রুত কমছে। রবি কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলে জানাল, আমি নাকি কিছু অ্যাপস ব্যবহার করেছি—যার নামও আমি কখনো শুনিনি। প্রতিদিন ৩-৫ টাকা করে, দিনে দুই-তিনবার টাকা কাটা হচ্ছিল।”
তিনি আরও জানান, “আমি যখন বললাম, অনুমতি ছাড়াই টাকা কাটা হচ্ছে—তারা দাবি করে অনুমতি দিয়েছি। আমি প্রমাণ চাইলে তা দেখাতে পারেনি। পরে জানাই, আমি কোর্টে মামলা করবো। এরপর তারা সমাধানের আশ্বাস দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে ফেরত না দিলে মামলা করার হুমকি দিই। পরদিন রবি জানায়, প্রায় দুই মাসে মোট ৬০০ টাকা কাটা হয়েছে, যা পরে বিনা শর্তে ফেরত দেওয়া হয়।”
তারেক শিকদার প্রশ্ন তোলেন, “যদি একজন গ্রাহকের ৬০০ টাকা এমনভাবে কাটা হয়, তাহলে দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের ক্ষেত্রে এই ‘ডিজিটাল ডাকাতি’ থেকে অপারেটররা কত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে?”
এ বিষয়ে রবি আজিয়াটা পিএলসি এক বিবৃতিতে জানায়, “গ্রাহকের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (ভ্যাস) চালু করার সুযোগ নেই। ভ্যাস সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রাহকের সম্মতি দুই ধাপে (double consent) নিশ্চিত করা হয়। কোনো গ্রাহক ভুলবশত ভ্যাস সেবা চালু করলে, অভিযোগের ভিত্তিতে তা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিটিআরসি’র নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। গ্রাহকের সন্তুষ্টিই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “মোবাইল অপারেটরগুলো যখন-তখন গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে। অনেকেই বিষয়টি বুঝতে পারেন না বা প্রতিবাদ করতে ভয় পান। এ ক্ষেত্রে দায় নিতে হবে বিটিআরসিকে, কারণ সংস্থাটি বারবার অভিযোগ জানার পরও কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
তিনি আরও বলেন, “এর আগেও গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া সিম বিক্রির বিষয়ে একজন গ্রাহক জিডি করলেও বিটিআরসি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই দায় এড়ানোর সুযোগ তাদের নেই। প্রতিদিনই হাজারো গ্রাহক অজান্তে টাকা হারাচ্ছেন। এখন সময় এসেছে বিটিআরসির কঠোর নজরদারির, যাতে গ্রাহকের টাকায় কেউ আর ‘ডিজিটাল ডাকাতি’ চালাতে না পারে।”
সর্বশেষ খবর