
দ্বিতীয় স্ত্রী সাথীকে বিয়ে করার পর কাবিনের নামে প্রতারণা ও ছেড়ে যেতে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চরফ্যাশনের চর মানিকা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন রাসেলের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সাথী বৃহস্পতিবার চরফ্যাশন রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন হুমকি ও প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন।
সাথী তাঁর অভিযোগে বলেছেন, তাঁর পৈতৃক বাড়ি চরফ্যাশনের চর আইচা থানাধীন ঢালচরে। ১৬ বছর আগে বোরহানউদ্দিনের এক প্রবাসীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সেই সংসারে তাঁর জিসান নামে একটি পুত্রসন্তান আছে। ওই পুত্রসন্তানের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য তিনি পৈতৃক এলাকার চর মানিকার দক্ষিণ আইচা বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এখানেই ছাত্রলীগ নেতা এবং পরবর্তীতে চর মানিকার চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিনের কুনজরে পড়েন তিনি। চেয়ারম্যানের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দিলে তিনি তাঁর প্রবাসী স্বামীকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়ে তাঁর প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করে তাঁকে তালাক দিতে বাধ্য করেন।
প্রথম স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পাশাপাশি সঞ্চিত টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাসেল সাথীকে নিজের মতো করে ব্যবহার করতে শুরু করেন। সেই সম্পর্কের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হন রাসেল এবং বিজয়ী হন। সেই নির্বাচনের সময় সাথীর প্রবাসী স্বামীর পাঠানো সঞ্চিত ১৫ লাখ টাকা রাসেল হাতিয়ে নেন এবং সাথীকে নিজের কব্জায় নিয়ে নেন।
এসবের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রাসেল সাথীকে নিয়ে ঢাকায় গা ঢাকা দেন এবং নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন। বিয়ে এবং সংসার নাটকেও শুরু হয় স্বামী রাসেলের প্রতারণা।
সাথী বলেছেন, ১০ লাখ টাকা কাবিন করার কথা বলে মাত্র ১ লাখ টাকা কাবিনে লিখে রাসেল তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এই সুযোগে রাসেল নিজের ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে নারায়ণগঞ্জের বাসায় নিজকে ভুক্তভোগী সাজিয়ে জনতা সৃষ্টি করে হামলা, ভাঙচুর চালিয়ে তাঁর স্বর্ণালংকার সব লুটপাট করে নিজের দখলে নিয়ে নেন। এমন নাটকের মধ্য দিয়ে রাসেল পুলিশের হাতে ধরা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে জেলে চলে যান এবং ১৫ দিন পর জেল থেকে বের হয়ে ভোলা সদরে বাসা ভাড়া নেন। ‘এই ভোলার ভাড়া বাসায় আসার পর রাসেল আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে রাসেল তাঁর মা এবং চাচাতো ভাই দুলালকে পাঠিয়ে বাসায় আমাকে মারধর করে আহত করেন। আমি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিই,’ জানান সাথী।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী রাসেল তাঁর কোনো খোঁজখবর নেননি বরং তিনি সাথীকে তালাক প্রদান এবং হত্যার হুমকি দিচ্ছেন, বলেছেন সাথী। পাশাপাশি তাঁর পালিত বাহিনী দিয়ে তাঁকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন। নিয়মিত হত্যার হুমকীতে তিনি উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত। এই হুমকি-ধামকির মধ্যে গত ৭ সেপ্টেম্বর সাথী স্বামী রাসেলের খোঁজে তাঁর চর মানিকার বাড়িতে যান এবং সেখানে গেলে প্রথম স্ত্রীসহ তাঁর পুরো পরিবার সাথীকে মারধর করে বের করে দেন।
প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার ও ইউপি চেয়ারম্যানের প্রেম প্রতারণার ফাঁদে ফেঁসে সাথী এখন সংসার আর নিরাপত্তার খোঁজে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন রাসেল সাথীকে নিজের বিবাহিত স্ত্রী দাবি করেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর