বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ন্যায়বিচার ব্যর্থ হলে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে। আইন কেবল নিয়মের সমষ্টি নয়, এটি জাতির নৈতিক বিবেকের প্রতিফলন। শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারপতি রেফাত আহমেদ বলেন,“ন্যায়বিচার ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো ধসে পড়ে। আইন পেশা শুধু চাকরি নয়, এটি এক ধরনের নৈতিক সাধনা।”তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, রাষ্ট্রের প্রকৃত শক্তি প্রশাসনিক কাঠামোয় নয়, বরং তার নৈতিক ভিত্তিতে নিহিত।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের কাঠামোগত সংস্কার এখন সময়ের দাবি। এ প্রসঙ্গে তিনি তার ঘোষিত ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের রূপরেখা উপস্থাপন করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন,“অবিশ্বাস বা একতরফা আচরণ এই স্বাধীনতার ভিত্তিকে দুর্বল করতে পারে।”বিচারব্যবস্থার আধুনিকায়নে প্রযুক্তির ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিচারপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে, তবে মানবিকতা ছাড়া সেই ব্যবস্থা যান্ত্রিক হয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
আইন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন,“প্রত্যেক আইনের পেছনে আছে একটি জীবন, প্রত্যেক রায়ের পেছনে আছে একটি ভাগ্য। এই উপলব্ধিই আইনপেশাকে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নৈতিক চর্চায় পরিণত করতে পারে।”তার মতে, ন্যায়বিচারের পুনর্জাগরণ এখন সময়ের আহ্বান—এটি শুধু বিচার বিভাগের নয়, পুরো জাতির দায়িত্ব।
“সংবিধানের অঙ্গীকার—স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচার—কাগজে নয়, নাগরিকের জীবনে পৌঁছে দিতে হবে,” বলেন তিনি।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর