ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন করে সামরিক হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের USS Gerald R. Ford নামের একটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে, যা ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্বের প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে মাদুরো বলেন, “আমাদের যুদ্ধের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে, যা আগ্রাসনের প্রতীক। তারা লাতিন আমেরিকার শান্তি ভঙ্গ করতে চাইছে।”
মাদুরো আরও অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন প্রশাসন ভেনেজুয়েলার সরকারকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে এবং এর অংশ হিসেবে এই নৌবহর মোতায়েন করা হয়েছে। তার ভাষায়, “এটি শুধুমাত্র সামরিক উপস্থিতি নয়, এটি আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সরাসরি বার্তা।”
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত মাদুরোর অভিযোগের বিষয়ে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেছেন, USS Gerald R. Ford নিয়মিত নৌ–অভিযান পরিচালনা করছে এবং এটি কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নয়।
ভেনেজুয়েলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশটি তাদের উপকূলীয় নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলকে অবস্থান নিতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার বামপন্থী দেশগুলো এই ঘটনাকে “নতুন শীতল যুদ্ধের ইঙ্গিত” হিসেবে দেখছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েনে রয়েছে। ওয়াশিংটন সরকার মাদুরো প্রশাসনের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অপরদিকে, মাদুরো সরকার বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রকে “সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনকারী” আখ্যা দিয়ে আসছে।
বর্তমানে ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহর উপস্থিতি এবং ভেনেজুয়েলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে, যা গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর