 
          
 
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক কলহ ও পরকীয়ার জেরে নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া যুবক মো. রায়হান মিয়া (২৭) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকলেছুর রহমান মণ্ডল।
নিহত রায়হান মিয়া উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর ধোপাডাঙ্গা গ্রামের মো. চান মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী আদুরী বেগম ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রায়হান দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে জুয়া ও অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কের জালে জড়িয়ে পড়েন। দুই মাস আগে স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার সময় ধরা পড়লে স্থানীয়ভাবে তা মীমাংসা হয়। সে সময় স্ত্রী আদুরী বেগম শাশুড়ির চাপে নিজের গয়না বিক্রি করে স্বামীকে মুক্ত করেন।
কিছুদিন পর রায়হান আরও এক নারীর সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে রায়হান স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতে থাকেন। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে এক মাস আগে আদুরী বেগম সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রায়হানের বাবা চান মিয়া তাঁর বড় শ্যালককে নিয়ে পুত্রবধূ আদুরীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যান। প্রথমে আদুরী রাজি না হলেও শ্বশুরের অনুরোধে শর্তসাপেক্ষে রাজি হন যে, রায়হান যেন আর নির্যাতন না করেন ও জুয়া খেলা বন্ধ করেন।
এ খবর শুনে রায়হান ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে মোবাইলে হুমকি দেন এবং স্ত্রীকে আনতে নিষেধ করেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে তিনি নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর তিনি পুকুরে লাফিয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
রায়হানের মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, “এ ঘটনায় থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় নি।
সালাউদ্দিন/সাএ
 সর্বশেষ খবর