ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা ভবনের পুর্ব অংশের লিফটে হরহামেশাই যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ে। এর মধ্যে মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও থেমে নেই দূর্ঘটনা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পূর্বে এমন ঘটনায় বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও মিলেনি কোন সাড়া, নেয়া হয়নি কোন দীর্ঘ মেয়াদি উদ্যোগ।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) কলা ভবনের এই অংশের লিফটটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় লিফটে আটকা পড়েন বিভিন্ন বিভাগের নারী শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, এর আগে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীরা লিফটের এমন যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। এমনকি লিফটে আটকা পড়ে নারী শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে।
এমন ঘটনার উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ শাহ বলেন, এই লিফটির জন্য টানা ৪ মাস ডিন থেকে প্রক্টর, প্রক্টর থেকে ভিসি এমন কোনো দুয়ারে নেই যাইনি, এরপর দিল সামান্য একটা বাজেট তাও লিফটি পরিবর্তন করে নাই। হালকা একটু মেরামত করে আবার চালিয়ে দিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন লাশ দেখার আগ পর্যন্ত কোনো বিষয়ে টনক নড়ে না।
দূর্ঘটনা এড়াতে ওই লিফট ব্যবহার থেকেই দূরে থাকেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ঢাবির কলাভবনের এই লিফট বিকল হওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। ঢুকলেই একটা আতঙ্ক নিয়ে ঢুকতে হয়। একটা ভালো মানের লিফট লাগানো এখন অপরিহার্য হয়ে গেছে। এভাবে অবহেলা করলে একদিন বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয় এই দায় এড়াতে পারবে না। আর আমি নিজেই ৫ তলা সিঁড়ি দিয়ে যাই তাও লিফট ইউজ করি না।
এদিকে আকিব হাসান নামে এক শিক্ষার্থী লিফট ব্যবহারের পেছনে শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, লিফটে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি মানুষ ওঠা, একটি কারণ হতে পারে। তবে দেখেছি বেশি মানুষ হয়ে গেলে লিফট এলার্ম দেয়া শুরু করে, এরপরও অনেকে এভাবেই লিফটে উঠে। আমারা যারা শিক্ষার্থী আছি, লিফট ব্যবহারে তাদেরও কিছুটা সচেতন থাকা।
লিফটে আটকা পড়া শিক্ষার্থী লিজিয়া পারভিন মনিকা বলেন, আজ সকালে আমরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য ৯ জন লিফটে উঠেছিলাম। এর ধারণক্ষমতা ১০ জন। যদি ৯ জন ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ হতো, তাহলে সাইরেন বেজে উঠত। কিন্তু লিফটে সাইরেন বাজেনি। ভেতরে থাকা নম্বরে ও বন্ধুদের কল দেয়ার কিছুক্ষণ পর লিফটম্যান এসে আমাদের উদ্ধার করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, আমাদের এই লিফটের পেছনে অনেক অর্থ ব্যায় করা হয়েছে তারপরও আবার এটি এমন সমস্যা উদ্বেগজনক। আমরা উচ্চতর প্রশাসনকে জানিয়েছি। আশা করি, শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নেবে।
লিফট সমস্যার স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, যে লিফটগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো অনেক দামি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ জন্য আলাদা বাজেট না আসলে নতুন করে স্থাপন করাও কঠিন। তাছাড়া এগুলো যে খুব পুরোনো এমনও না। আমরা এই লিফট এক্সচেঞ্জের কথা ভাবছি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর