মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে সবসময়ই “শান্তি প্রতিষ্ঠার দূত” হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে তার প্রশাসনের নীতিমালা ও কর্মকাণ্ডের বিশ্লেষণ বলছে, সেই ‘শান্তি’ আসলে যুদ্ধের হুমকি ও শক্তির প্রদর্শনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। — এমন মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
“শান্তির জন্য শক্তি” নীতি
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন ‘peace through strength’— অর্থাৎ “শক্তির মাধ্যমে শান্তি” নীতিতে বিশ্বাস করত। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে নিজেকে শান্তিরক্ষক হিসেবে দাবি করেছে, অন্যদিকে বিভিন্ন সময়ে সামরিক হস্তক্ষেপ, বিমান হামলা ও কড়া নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।
একজন প্রাক্তন কূটনীতিকের ভাষায়, “ট্রাম্পের শান্তি আসলে শক্তি প্রদর্শনের শান্তি। তিনি শান্তি চেয়েছেন, তবে তা এসেছে ভয় দেখানোর মাধ্যমে।”
সামরিক হস্তক্ষেপ ও বৈরিতা
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ইরান, সিরিয়া ও উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে একাধিকবার সামরিক হুমকি দেওয়া হয়। ইরানের জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ, সিরিয়ার বিমান হামলা এবং উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক হুমকি— এসব পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা ‘শান্তির বিপরীত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তবে ট্রাম্প সমর্থকরা যুক্তি দিয়েছেন, এসব পদক্ষেপের কারণেই বড় যুদ্ধ এড়ানো গেছে। তাদের দাবি, “শক্তি দেখিয়ে ট্রাম্প আমলে আমেরিকা কোনো নতুন যুদ্ধ শুরু করেনি।”
কূটনীতির দ্বৈত চরিত্র
প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি ছিল দ্বৈত প্রকৃতির— একদিকে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে কয়েকটি শান্তি চুক্তি (যেমন আব্রাহাম অ্যাকর্ডস) স্বাক্ষর করেন, অন্যদিকে ঐ অঞ্চলে অস্ত্র বিক্রি ও সামরিক উপস্থিতি বাড়ান। এর ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বিভক্ত হয়— কেউ ট্রাম্পকে শান্তির দূত, আবার কেউ যুদ্ধবাজ নেতা হিসেবে দেখেন।
ভবিষ্যৎ প্রভাব
এপি বিশ্লেষণে বলা হয়, ট্রাম্পের নীতি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সম্পর্কের ধারা পরিবর্তন করেছে। এই নীতি হয়তো স্বল্পমেয়াদে সংঘাত ঠেকিয়েছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর