• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২৬ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৬ রাত

রাজস্ব সুরক্ষার পথে কাঁটা: অভিজাত শপিং মলের 'অবৈধ' ফোন শপগুলো

ছবি: সংগৃহীত

রাজস্ব আয় নিশ্চিত করতে এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অবৈধ মোবাইল ফোনের আমদানি বন্ধে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (NEIR) চালুর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। তবে, এই উদ্যোগের সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হলো- রাজধানীর অভিজাত শপিং মলগুলোতে অবৈধ ফোন বিক্রেতাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক।

অনুসন্ধানে অভিযোগ উঠেছে, দেশের অবৈধ ফোন বেচা-কেনার প্রধান কেন্দ্রস্থল বা ‘দুর্গ’ হয়ে উঠেছে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মল।

এই অভিযোগ সত্যি হলে, এটি স্পষ্ট যে, হাজার হাজার কোটি টাকার এই অবৈধ ‘গ্রে’ মার্কেট কোনো গোপন স্থান থেকে নয়, বরং রাজধানীর অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রের ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। এই শক্তিশালী সিন্ডিকেটই আসন্ন এনইআইআর সিস্টেম বাস্তবায়নের পথে প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘গ্রে’ মার্কেটের দখলে ৬০ শতাংশ বাজার: সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র ও বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের মোট মোবাইল বাজারের প্রায় ৪০ থেকে ৬০ শতাংশই এই ‘গ্রে’ মার্কেটের দখলে। এর ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। মোবাইল ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (MIOB) জানিয়েছে, স্থানীয় কারখানাগুলো দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা রাখলেও, অবৈধ ফোনের এই সহজলভ্যতার কারণে তারা সেই সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না।

এরচেয়েও বড় ক্ষতি হচ্ছে সরকারের। এই অবৈধ বাজারের কারণে সরকার প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার শুল্ক ও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিজাত মলে অবৈধ বাণিজ্যের স্বর্গরাজ্য: অনুসন্ধানে দেখা যায়, বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্কের মতো অভিজাত মলগুলোর বিভিন্ন শোরুমই এই অবৈধ বাণিজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অ্যাপল, স্যামসাং, গুগল পিক্সেল, শাওমি, মটোরোলার মতো শীর্ষ ব্র্যান্ডের হাই-এন্ড ফোনগুলো, যার প্রধান বিক্রেতা এই শোরুমগুলো।

অভিযোগ রয়েছে,অ্যাপল গেজেট, গ্যাজেট অ্যান্ড গিয়ার, এসএমএম গেজেট, রিও ইন্টারন্যাশনাল, ড্যাজেল মোবাইল শপ, গ্যাজেট অরবিট-এর মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো, যাদের মূল শোরুমগুলো বসুন্ধরা সিটিতেই অবস্থিত, তারাই এই আনঅফিসিয়াল বা অবৈধ ফোনের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। বৈধ আমদানিকারকদের চেয়ে তারা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত কম দামে হ্যান্ডসেট বিক্রি করতে পারছে, কারণ এই ফোন আমদানিতে তাদের কোনো শুল্ক বা কর দিতে হচ্ছে না।

ব্র্যান্ডের আড়ালে চলছে প্রতারণা: দেশের অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার বা ‘গ্রে’ মার্কেট নিয়ে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য। জানা গেছে, এই বাজারে বিক্রি হওয়া ফোনের প্রায় ৭৫ শতাংশই ‘রিফারবিশড’ বা সংস্কার করা পুরোনো ফোন, যার বেশিরভাগই আসছে চীনের চোরাই বাজার থেকে।

‘গ্রে’ মার্কেটের শক্তিশালী সিন্ডিকেটগুলো চীন থেকে এই ব্যবহৃত ফোনগুলো সংগ্রহ করে, সেগুলোকে পালিশ করে এবং নতুন প্যাকেটে ভরে হুবহু নতুনের মতো করে ফেলে। এরপর এই ফোনগুলোই ‘আনঅফিসিয়াল’ বা অবৈধ ফোন হিসেবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশের বাজারে ছাড়া হয় এবং ক্রেতাদের কাছে নতুন ফোনের দামেই বিক্রি করা হয়। এই প্রতারণার একটি বড় উদাহরণ হয়ে উঠেছে মটোরোলার মতো কিছু ব্র্যান্ড। ক্রেতাদের মধ্যে প্রায়ই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায়-কীভাবে মটোরোলার মতো ব্র্যান্ডের ফোন ভারতের বাজারের চেয়েও বাংলাদেশের ‘গ্রে’ মার্কেটে এত কম দামে পাওয়া যাচ্ছে?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এর মূল কারণই হলো এই ‘রিফারবিশড’ চক্র। ক্রেতারা যে ফোনগুলোকে নতুন মটোরোলা ফোন ভেবে কিনছেন, তার একটি বড় অংশই আসলে মটোরোলার আসল নতুন ফোন নয়। এগুলো চীনের বিভিন্ন চোরাই বাজার থেকে সংগৃহীত পুরোনো বা ব্যবহৃত ফোন, যা পালিশ করে নতুন হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে। ক্রেতারা কম দামে নতুন ফোন পাচ্ছেন ভেবে খুশি হলেও, আদতে তারা একটি পুরোনো ও সংস্কার করা ফোন কিনে প্রতারিত হচ্ছেন।

এনইআইআর-এর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ: সরকার আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে অবৈধ ফোন বন্ধের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে এই শক্তিশালী সিন্ডিকেট, যারা খোদ রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে বসেই তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ নামে যে সংগঠনটি এনইআইআর চালুর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তাদের মূল শক্তিই এই বসুন্ধরা সিটি-কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা। অবৈধ ফোনের এই রমরমা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই তাদের এই উদ্বেগ-এর প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সরকার যদি সত্যিই এই ‘গ্রে’ মার্কেট বন্ধ করতে চায় এবং এনইআইআর সিস্টেমের সুফল পেতে চায়, তবে বিটিআরসি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই প্রথমে বসুন্ধরা সিটির মতো প্রধান কেন্দ্রগুলোতে অভিযান পরিচালনা করতে হবে, যেখানে প্রকাশ্যেই এই অবৈধ ফোন বিক্রি হচ্ছে।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]