ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যেন মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছিলেন। মহামারি ডেঙ্গুতে দেশে এখন মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে অহরহ। সেদিনের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বললেন মাহমুদউল্লাহর স্ত্রী জান্নাতুল কাওসার মিষ্টি।
ফেসবুকে আজ মিষ্টি কার্ডিওথোরাসিক হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটের (সিএইচডিউ) একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবি পোস্ট করে গত সপ্তাহের সেই দুঃসময়ের কথা বলতে গিয়ে হয়তো তাঁর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। মাহমুদউল্লাহর স্ত্রী লিখেছেন, ‘এই দরজার সামনে আল্লাহ আর কখনো দাঁড় না করান।
এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন আর ভয়ংকর সময় (২৭ অক্টোবর)। এই দরজার ভেতরে ঢোকার আগে সে যখন আমাকে বলল, আমি যেন তাকে ক্ষমা করে দিই, সেটা শুনেও আমি এমন ভান করলাম যেন কিছুই হয়নি। হবেও না ইনশা আল্লাহ।’
প্রাণপ্রিয় স্বামী যখন হাসপাতালের বিছানায়, তখন কী যে ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেটা মাহমুদউল্লাহর স্ত্রী মিষ্টিই ভালো জানেন। কঠিন সেই সময়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে সর্বক্ষণ দোয়া করেছেন মিষ্টি। তাঁর আশা ছিল, সৃষ্টিকর্তা কখনোই তাঁকে নিরাশ করবেন না। মাহমুদউল্লাহর স্ত্রী লিখেছেন, ‘সে সময় নিজেকে খুব শক্ত করে সামলেছি।
এখন সেটা ভেবে নিজের কাছেই খুব অবাক লাগছে, সেই আমি কীভাবে এত শক্ত ছিলাম। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী ছিলাম যে আমার আল্লাহ আমাকে সবরের পরীক্ষা করছিলেন। এই পরীক্ষায় আমি উত্তীর্ণ হবই হব ইনশা আল্লাহ। কিন্তু যতক্ষণ তার পাশে ছিলাম, মনে মনে ভয় পাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম, তার হায়াত কতটুকু সেটা তো একমাত্র আল্লাহই জানেন। সর্বক্ষণ দোয়া আর জিকিরে কীভাবে যেন সেই কঠিন সময়টুকু পার হয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ, মাশা আল্লাহ। আল্লাহ মহান, পরম দয়ালু। তাঁর দয়ার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।’
মাহমুদউল্লাহ শঙ্কামুক্ত হলেও কঠিন সেই মুহূর্তের কথা এখনো ভুলতে পারছেন না মিষ্টি। এক সপ্তাহ আগের হলেও সেই ঘটনার ট্রমা যেন কাটছেই না। মাহমুদউল্লাহর স্ত্রী লিখেছেন, ‘মানুষের জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যা কখনো ভোলা যায় না। সেই কঠিন সময়টুকু এখনো বারবার মনে পড়ছে। হয়তো এই ট্রমা কাটতেও সময় লাগবে।’

সালাউদ্দিন/সাএ
 সর্বশেষ খবর