রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোতে মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচল এখন সবচেয়ে বড় ট্রাফিক সমস্যার একটিতে পরিণত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন হাজারো অটোরিকশা অবাধে চলে আসছে ব্যস্ত সড়কে, ফলে যানজট, দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা বেড়ে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।
অটোরিকশা চালকরা সড়কের নিয়ম মানছেন না, লেন ভেঙে হঠাৎ যাত্রী তুলছেন, আবার মাঝরাস্তায় থেমে যানবাহনের গতি রুদ্ধ করছেন। এতে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, জরুরি সেবা যেমন অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসও বিপাকে পড়ছে। তবুও প্রতিদিন একই দৃশ্য—চোখে পড়ছে প্রধান সড়কগুলোয় সারি সারি অটোরিকশা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু চালকদের ওপর আইন প্রয়োগ করে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। চালককে আটক বা জরিমানা করা হলে তারা আবারও রাস্তায় ফিরে আসে। কিন্তু যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা ও ভয়ের সৃষ্টি করা গেলে মূল সড়কে অটোরিকশা উঠবে না। কারণ চালক তখন যাত্রীই পাবে না।
তাদের পরামর্শ, মূল সড়কে অটোরিকশা ব্যবহার করা যাত্রীদের বিরুদ্ধেও জরিমানার বিধান কার্যকর করতে হবে। এতে যাত্রী নিজেই ভাববে, “এই রাস্তায় উঠলে জরিমানা দিতে হবে”—ফলে তিনি বিকল্প পথ বা গণপরিবহন বেছে নেবেন। এতে স্বাভাবিকভাবে অটোরিকশার চাপ কমে আসবে।
বর্তমানে রাজধানীতে নিবন্ধিত অটোরিকশার সংখ্যা কয়েক লক্ষাধিক, কিন্তু এর অন্তত এক-তৃতীয়াংশ চলছে নিষিদ্ধ এলাকায়। এই অনিয়ন্ত্রিত চলাচল শুধু যানজট নয়, দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলারও বড় উৎস। বহু দুর্ঘটনার তদন্তে দেখা গেছে, হঠাৎ রাস্তায় ওঠা অটোরিকশাই মূল কারণ।

ট্রাফিক বিভাগ বলছে, বারবার অভিযান চালানো হলেও স্থায়ী পরিবর্তন আসে না। কারণ চালকরা জানে, সর্বোচ্চ জরিমানা দিলে আবার রাস্তায় নামা যাবে। কিন্তু যদি যাত্রীকেও জরিমানার আওতায় আনা যায়, তাহলে উভয় পক্ষই মূল সড়ক এড়িয়ে চলতে বাধ্য হবে।
অটোরিকশা মূল সড়ক থেকে সরানো এখন সময়ের দাবি। শহরের যানজট নিরসন, সড়ক নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে কেবল চালক নয়, যাত্রীকেও দায় নিতে হবে। যাত্রীর কাছ থেকে জরিমানা আদায়ই হতে পারে এই অনিয়ন্ত্রিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
সর্বশেষ খবর