প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় অপরাজেয় বাংলার সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাবির সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. প্রিয়াঙ্কা গোপ। বক্তব্য দেন নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষক লাবণী বন্যা, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক কামাল চৌধুরী, থিয়েটার অ্যান্ড পারফর্ম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ঈস্রাফিল শাহীনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদকসহ বিভিন্ন হল সংসদের সংস্কৃতি সম্পাদকরা কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন। সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানও এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংগীত বিভাগের শিক্ষক আজিজুর রহমান তুহিন বলেন, ‘সভ্যতার বিকাশ টিকে আছে শিল্প-সংস্কৃতির ওপর। প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষার সুযোগ বন্ধ করা মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক ও নৈতিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করা।’
সংগীতশিল্পী শায়ান বলেন, ‘আগে আমরা প্রতিবাদের গান গাইতাম, এখন গান গাওয়াটাই হয়ে গেছে প্রতিবাদ। সংগীতকে ধর্মের বিপরীতে দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে—এটা বন্ধ করতে হবে।’
ডাকসুর কেন্দ্রীয় সদস্য হেমা চাকমা বলেন, ‘কিছু গোষ্ঠীর চাপেই সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ বাতিল করা হয়েছে। এটা প্রজন্মের সৃজনশীল বিকাশের পথে বড় বাধা।’
থিয়েটার বিভাগের শিক্ষক ঈস্রাফিল শাহীন বলেন, ‘সংস্কৃতি কখনো ধর্মের বিরোধিতা করে না। ধর্ম দিয়ে রাষ্ট্র চালানো গেলেও সংস্কৃতি ছাড়া সমাজ বিকশিত হয় না।’
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের সংস্কৃতি সম্পাদক হুমায়রা উপন্যাস বলেন, ‘সংগীতকে শুধু বিনোদনের বিষয় হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু এটি শিক্ষার অংশ। নীতিনির্ধারকরা এর গুরুত্ব বুঝতে না পারার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’–এ সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ২ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে তা বাদ দেয়া হয়। ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর আপত্তি এবং বিকল্প হিসেবে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের দাবির পর সরকার এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বলে জানা যায়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর