• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ সেকেন্ড পূর্বে
রফিকুল ইসলাম
বান্দরবন প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:২৮ বিকাল

লামায় সড়ক নির্মাণে অনিয়ম, অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেনা এলাকাবাসী

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ডুলহাজারা থেকে হারগাজা (সাপেরঘারা রোড) পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার ৬২০ মিটার পিচ ঢালা রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৪টি প্যাকেজে নির্মাণাধীন সড়কটি এনফোর/এমডিসি (জেভি) নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৩টি প্যাকেজ ও মেসার্স মারমা এন্টারপ্রাইজ ১টি প্যাকেজের কাজ পেয়েছে। দুই লাইসেন্সে কাজ পেলেও কাজটি করছে অন্যরা। ব্যবহার হচ্ছে অতি নিম্নমানের নির্মাণ-সামগ্রী। স্থানীয়দের আশঙ্কা স্টিমিট মত কাজ নাও হতে পারে। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লামা অফিসে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।

এলজিইডি লামা অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও এডিবি এর অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১ কিলোমিটার ৬২০ মিটার পিচ ঢালা ডুলহাজারা থেকে হারগাজা (সাপেরঘারা রোড) পর্যন্ত সড়কটি নির্মিত হচ্ছে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লামা অফিস। ২৫ জুন ২০২৫ইং কাজ শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ৪টি প্যাকেজে নির্মিত সড়কের ১, ৩ ও ৪নং প্যাকেজ ৩টির কাজ পেয়েছে এনফোর/এমডিসি (জেভি) নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যদি কাজ গুলো করছে অন্যরা। ১নং প্যাকেজের কাজ করছে স্থানীয় নাজমুল ইসলাম পিয়ারু নামে এক ব্যক্তি। অন্য ৩ ও ৪নং প্যাকেজের কাজ করছে মোঃ শামসুদ্দিন। অপর ২নং প্যাকেজটির কাজ পেয়েছে মেসার্স মারমা এন্টারপ্রাইজ। যদিও এই কাজটি এখনো শুরু হয়নি।

সম্প্রতি সরেজমিনে নির্মাণাধীন রাস্তাটি দেখতে গেলে অভিযোগ দেন স্থানীয়রা। তারা জানান, রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে ইটভাটায় বাজেয়াপ্ত বড় বড় ইটের টুকরো। বালুর পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে পাহাড়ের কাটা মাটি। প্রথম শ্রেণির ইট ব্যবহার না করে দেওয়া হয়েছে ইটভাটার অকেজো ইট। এছাড়া ঠিকাদারের নাম, প্রকল্পের নাম, প্রাক্কলিত ব্যয়, চুক্তির মূল্য, কাজের শুরু ও মেয়াদ লিখে সাইনবোর্ড টাঙানোর কথা থাকলেও সেখানে প্রাক্কলিত ব্যয়, চুক্তির মূল্য লেখা নেই। অভিযোগ জানাতে লামা অফিসের নামে একটি মোবাইল নাম্বার সাইনবোর্ডে দেয়া থাকলেও সেটা অনেক সময় বন্ধ থাকে বা কল গেলেও কেউ রিসিভ না করার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।

সড়কের ১নং প্যাকেজের কাজ নিয়ে কথা বলেন কুরুকপাড়া ঝিরি আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, ‘এখন সড়কে ডবিøউপিএম (সাবগ্রেড) এর কাজ চলছে। ডবিøউপিএমে এলজিইডি প্রকৌশলীদের কথা মতে ৫০% খোয়া (কংকর) ৫০% বালু দেয়ার কথা। কিন্তু খোয়া দেয়া হচ্ছে মাত্র ১০%। কাজের সময় প্রকৌশলীরা উপস্থিত থাকেনা। ঠিকাদারের লোকজন মন মত কাজ করেন। আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর ২০২৫ইং) এলজিইডির কোন স্টাফ নেই।’ ১নং প্যাকেজ অংশে সড়কের ১৪ নাম্বার নামক স্থানের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, ‘যেনতেন ভাবে রাস্তার কাজ করছে। ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় তাকে কেউ কিছু বলছেনা। এলজিইডিকে আপত্তি জানিয়েও লাভ হয়নি।’

সড়কের ৩ ও ৪নং প্যাকেজের কাজ করছে মোঃ শামসুদ্দিন। এই অংশের স্থানীয় বাসিন্দা সাপেরঘারা বাজারের খতিজা বেগম, রইঙ্গাঝিরি গ্রামের সর্দার ফরিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের এতদিন পায়ে হেঁটে বাজারে ও স্কুলে যেতে হতো। রাস্তাটি হচ্ছে বলে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তার কাজের মান দেখে হতাশ হয়েছি। যেভাবে কাজ করেছে তাতে এক বর্ষা যেতে না যেতেই রাস্তাটা ভেঙে যাবে বলে মনে হচ্ছে।’ সাপেরঘারা বাজার এলাকার একজন সমাজসেবক সাহাব উদ্দিন বলেন, ৩ ও ৪নং প্যাকেজ মানে শামসুদ্দিনের অংশে কোন বালু ব্যবহার করা হয়নি। পাহাড়ের লাল বালুমাটি দিয়ে কাজ করেছে। স্থানীয়রা দুইবার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে আবার একইভাবে কাজ করে ফেলেছে। কিছু বললে শত্রু হতে হয়।’

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মংমেগ্য মার্মা বলেন, ‘কি কাজ হবে কতটুকু হবে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। পাহাড়ের মাটি নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ হচ্ছে।’ এই সড়কে টমটম চালায় মোঃ সৈয়দ। তিনি বলেন, ‘যে কাজ করেছে চাক্কার সাথে লেগে কংকর উঠে যায়। নষ্ট ইট ও কংকর ব্যবহার করেছে। কাজ ভালো হয়নি।’

কাজের মান নিয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় ১নং প্যাকেজের উপ-ঠিকাদার নাজমুল ইসলাম পিয়ারু’র সাথে। তিনি বলেন, প্লিজ কিছু লিখিয়েন না, আমার ছোট ভাই আপনার সাথে দেখা করবে।’ ৩ ও ৪নং প্যাকেজের উপ-ঠিকাদার মোঃ শামসুদ্দিন বলেন, ‘অফিস ঠিক আছে। আপনারা যা লিখার লিখেন, সমস্যা নাই।’

লামা উপজেলা প্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন কাজের অনিয়মের বিষয়ে ফোন দিয়েছিল। কাজের দেখাশুনার দায়িত্বরত অফিসারকে তদারকি করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে পুণরায় কাজ করা হবে।’ বিষয়টি থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনকে জানানো হলে বলেন, ‘খবর নিয়ে দেখি। যদি কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। যারা এ কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]