• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫৮ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৫৫ রাত

নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন: কিটক্যাট চকলেট ও মেঘনা গ্রুপের চিনি মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি এবং বাজারজাত করার অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশ এবং মেঘনা গ্রুপের তিন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

এদের মধ্যে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামান এবং মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসানের করা দুই মামলায় এই আদেশ দিয়েছে ঢাকার নিরাপদ খাদ্য আদালত।

নেসলে বাংলাদেশের চকলেট কোটেড ওয়েফার কিটক্যাটের বিষয়ে মি. হাসান আবেদনে যে অভিযোগ করেছেন সেটি হলো, বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ও প্রত্যয়ন ছাড়াই এই ওয়েফার চকলেট দেশে বাজারজাত করা হচ্ছে।

একইসাথে এই দুগ্ধজাত পণ্যের দুইটি অংশ ওয়েফার বিস্কুট ও তার ওপরের চকলেটের আবরণে থাকা বিভিন্ন উপাদান নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অনেক কম বা বেশি রয়েছে।

মামলায় বলা হয়েছে, বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মানদণ্ড পরিমাপ করতে এই পরীক্ষা একটি সরকারি খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণাগারে করা হয়েছে।

অন্য আরেকটি মামলায়, বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপের মালিকানাধীন মেঘনা সুগার রিফাইনারির বিরুদ্ধে নিম্নমানের চিনি প্রস্তুতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এই কোম্পানির চিনিতে চিনির মাত্রা কম অর্থাৎ অনুমোদিত মাত্রার বেশি সুক্রোজ পাওয়া গেছে। এছাড়া চিনিতে সালফার ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা থাকার কথা নয়।

নিরাপদ খাদ্য আদালত দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই দুই মামলার প্রেক্ষিতেই প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে।

আগামী ১৫ ডিসেম্বর এই মামলা দুইটির পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে আদালত।

তবে, প্রতিষ্ঠান দুইটির সাথে যোগাযোগ করলে তাদের মুখপাত্ররা আনীত অভিযোগের সত্যতা নেই বলে দাবি করেছে 'বিবিসি বাংলা'র কাছে।

ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শকের মামলাতে ঠিক কি কি অভিযোগ আনা হয়েছে? অভিযোগ নিয়ে কী বলছে প্রতিষ্ঠানগুলো?

নেসলের কিটক্যাট ও মেঘনার চিনি নিয়ে যেসব অভিযোগ:

নেসলের যে চকলেট কোটেড ওয়েফার কিটক্যাট বাংলাদেশে পাওয়া যায়, সেটি পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করার কথা জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মানদণ্ড অনুযায়ী, এই পণ্যে সর্বোচ্চ এক শতাংশ অম্লতা বা অ্যাসিডিটি থাকার কথা।

কিন্তু নেসলের ওয়েফার বিস্কুটে তা পাওয়া গেছে দুই দশমিক ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ নির্ধারিত মাত্রার বেশি অম্লতা পাওয়া গেছে।

একইসাথে ওয়েফারে আবরণ হিসেবে যে চকলেট ব্যবহার করা হয় তাতে বিএসটিআই এর অনুমোদন অনুযায়ী, দুধের কঠিন পদার্থ থাকার কথা ১২ থেকে ১৪ শতাংশ।

কিন্তু কিটক্যাটের এই চকলেটে দুধের কঠিন পদার্থ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম পাওয়া গেছে। যা নয় দশমিক ৩১ শতাংশ।

একইসাথে, এ ধরনের পণ্যে বিএসটিআইয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী, দুধে ফ্যাট বা চর্বি থাকতে হবে দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ।

কিন্তু নেসলের এই পণ্যে পাওয়া গেছে এক দশমিক ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ এতে চর্বি নির্ধারিত পরিমাণের অনেক নিচে।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক মি. হাসান জানিয়েছেন, নেসলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা করার আগে তাদের পণ্য সরকারি পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে যাচাই করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পরই খাদ্য আদালতে মামলা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অন্যতম একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান মেঘনা সুগার রিফাইনারির বাজারজাত করা চিনিও পরীক্ষা করা হয়েছে।

এই মামলায় বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত চিনির নমুনায় শূন্য দশমিক শূন্য আট পিপিএম পরিমাণের সালফার ডাই অক্সাইডের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

কিন্তু বিএসটিআইয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী, চিনিতে সালফার ডাই অক্সাইড থাকারই কথা নয় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবার, চিনিতে যে পরিমাণের সুক্রোজ থাকার সরকারি অনুমোদন রয়েছে এই নমুনায় তার থেকে কম পরিমাণে পাওয়া গেছে।

সুক্রোজের অনুমোদিত পরিমাণ ৯৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। কিন্তু মেঘনা গ্রুপের চিনির নমুনায় পাওয়া গেছে ৭৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

মঙ্গলবার আদালতের আদেশের পর খাদ্য পরিদর্শক মি. হাসান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, "সালফার ডাই অক্সাইড হলো একটি প্রিজারভেটিভ এবং কৃত্রিমভাবে চিনি সাদা করতে এটি ব্যবহৃত হয়।"

এছাড়া কম মাত্রায় সুক্রোজ থাকার অর্থ এতে চিনির বদলে 'কৃত্রিম মিষ্টি করার উপাদান' ব্যবহার করা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা করেন মি. হাসান।

অভিযোগের জবাবে যা বলছে মেঘনা গ্রুপ:

আদালতের আদেশের বিষয়ে মেঘনা গ্রপের ব্র্যান্ড ডিভিশনের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী মো. মহিউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে নিম্নমানের চিনি উৎপাদনের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

মহিউদ্দিন জানান, মেঘনা গ্রুপ বাংলাদেশে চিনি উৎপাদন করে না। বরং ব্রাজিল থেকে চিনি আমদানি করা হয় বলে চিনিতে সালফার ডাই অক্সাইডের অস্তিত্ব থাকার কথা নয় বলে দাবি করেন তিনি।

'র সুগার' আমদানি করে বাংলাদেশে রিফাইন করে বাজারজাত করা হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।

মহিউদ্দিন বলেন, "আমরা আমাদের প্রডাকশন প্রক্রিয়ার কোথাও সালফার ইউজ করি না। সুগারে সালফারের অস্তিত্বের কথা যেটা বলা হইছে সেটা আমাদের বোধগম্য না। দ্বিতীয়ত: আমরা ব্রাজিল থেকে সুগার ইমপোর্ট করি।"

"ব্রাজিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এক্সপোর্টার। তারা নির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন ছাড়া কোনো সুগার এক্সপোর্ট করে না। আমরা শুধু এখানে কার্বনেশন করি। সো এখানে আমাদের আসলে কোয়ালিটির ব্যাপারে কম্প্রোমাইজ করার কোনো স্কোপ (সুযোগ) নাই " বলেন তিনি।

মেঘনা গ্রুপের এই কর্মকর্তার দাবি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) সকল মানদণ্ড অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানের বাজারজাত করা চিনিতে সুক্রোজের পরিমাণ বিএসটিআইয়ের মান অনুযায়ীই আছে।

"সবচেয়ে বড় কথা আমরা বিএসটিআইয়ের সব রেগুলেশন মেইনটেইন করে করি এবং বিএসটিআইয়ের যে লেটেস্ট রিপোর্ট সেখানে আমাদের সুক্রোজের পরিমাণ বলা হইছে যে অ্যাজ পার তাদের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী আছে। তাহলে এটা কিভাবে আসলো আমরা আসলে জিনিসটা বোধগম্য হচ্ছে না " বলেন মহিউদ্দিন।

তবে আদালতের আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়া বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

কিটক্যাট চকলেট নিয়ে যা বলছে নেসলে:

নেসলে বাংলাদেশ একটি লিখিত বিবৃতিতে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে।

বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া কিছু কিটক্যাট পণ্যের প্রয়োজনীয় আইনানুগ মানদণ্ড পূরণ না করার অভিযোগে গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, " কিটক্যাট একটি চকলেট কোটেড ওয়েফার এবং এই ক্যাটাগরির পণ্যের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের কোন অফিসিয়াল স্ট্যান্ডার্ড বা মানদণ্ড নেই।"

লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, নেসলে বাংলাদেশ যে কিটক্যাট বিক্রি ও বিতরণ করে সেগুলো প্রযোজ্য হয় এমন সকল জাতীয় রেগুলেশনস বা নিয়ম পূরণ করে।

একইসাথে নেসলের অভ্যন্তরীণ কঠোর গুণগত মান অনুসরণ করা হয়।

"নেসলেতে কোয়ালিটি বা মান নন-নেগোশিয়েবল বা আপোসহীন " বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

"বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) দেওয়া প্রতিবেদন (শুল্ক ছাড়পত্রের জন্য প্রয়োজন) স্থানীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের সাথে আমাদের পণ্যের কমপ্লায়েন্স আরো নিশ্চিত করে," জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এই ব্র্যান্ডের পণ্য নিরাপদ এবং মানের উপর পূর্ণ আস্থা রাখতে গ্রাহক ও ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নেসলে বাংলাদেশ।

লিখিত বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, "বাংলাদেশে চকলেট কোটেড ওয়েফারের জন্য বিএসটিআই মান প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সরকারের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রত্যাশী।"

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তাদের আমদানি করা পণ্যগুলো বিক্রি করার আগে স্থানীয় মানদণ্ড অনুযায়ী মান পরীক্ষা করা হয়। অভিযোগ আসার পরে পণ্যগুলো স্বতন্ত্র পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং মানসম্মত বলে ফলাফল পাওয়া গেছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]