সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের টানা কর্মবিরতিতে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। গতকাল রোববারও সারা দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেননি। ‘নো গ্রেড, নো ওয়ার্ক’ স্লোগানে তারা ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে চার দফা দাবিতে আজ সোমবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। দুই পর্যায়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি ডিসেম্বরের বার্ষিক পরীক্ষা ঘিরে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এতে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন অভিভাবকরা।
গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষকরা ক্লাস, পরীক্ষা ও সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত আছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে। এছাড়া দাবি আদায় না হলে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন এবং আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণাও রয়েছে। আন্দোলনের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল বা বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সরকারের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হলেও তাদের দাবি নিয়ে কোনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে কর্মবিরতিতে যেতে হয়েছে। তারা আশা করছেন, সরকার দ্রুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেবে। সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি না মানায় বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি জানান, আজ সোমবার থেকে শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন।
এদিকে, চার দফা দাবিতে আজ থেকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করছেন। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি জানিয়েছে, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত স্কুলের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষক আন্দোলনের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গতকাল ডিপিইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনে কোনো শৈথিল্য বা অনিয়ম দেখা গেলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর