নাইজেরিয়া সরকার ক্যাথলিক বোর্ডিং স্কুল থেকে অপহৃত প্রায় ১০০ শিশুকে উদ্ধার করেছে। আরও ১৫০ শিক্ষার্থী ও ১২ শিক্ষক এখনো অপহরণকারীদের হাতে বন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত ২১ নভেম্বর নাইজার অঙ্গরাজ্যের পাপরি এলাকার সেন্ট মেরিস ক্যাথলিক স্কুল থেকে মোট ৩০৩ শিক্ষার্থী ও ১২ শিক্ষককে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণের পরপরই প্রায় ৫০ শিক্ষার্থী পালাতে সক্ষম হয়।
সোমবার উদ্ধার হওয়া শিশুদের মিননা শহরের গভর্নমেন্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয় সাদা বাসে। নিরাপত্তা বাহিনীর সাঁজোয়া যান ও সামরিক টহলদল যে বাসগুলোকে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে এবং তাদের অনেককে ফুটবল জার্সি ও স্যান্ডেলসহ সাধারণ পোশাকে দেখা যায়। কর্মকর্তারা শিশুদের আলিঙ্গন করে স্বাগত জানান এবং পরে ছবি তোলেন।
নাইজার অঙ্গরাজ্যের গভর্নর মোহাম্মদ বাগো বলেন, উদ্ধার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দ্রুতই তাদের পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, যারা প্রার্থনা করছেন তারা যেন প্রার্থনা চালিয়ে যান, কারণ এখনো যারা বন্দি রয়েছে তাদেরও উদ্ধার করতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু শিশুদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সব অপহৃতদের খুঁজে বের করে নিরাপদে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হবে—কেউই বাদ যাবে না। সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখনো ১১৫ শিক্ষার্থী ও ১২ শিক্ষক নিখোঁজ, তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এই সংখ্যা প্রায় ১৬৫ বলে উল্লেখ করেছে। অপহরণকারীরা কোনো মুক্তিপণ নিয়েছে কি না—সরকার সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
ইউনিসেফ কর্মকর্তা তেরেসা পাম্মা বলেছেন, উদ্ধার হওয়া শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন, কারণ তারা দুই সপ্তাহ বনভূমিতে বন্দিত্বে ছিল। উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থী ফ্লোরেন্স মাইকেল জানান যে, অপহরণকারীরা তাদের ত্রিপল দিয়ে বনভূমিতে চুপচাপ শুয়ে থাকতে বাধ্য করত।
এদিকে পাপরি গ্রামের অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন যে, তাদের সন্তানদের মুক্তির খবর সরকার তাদের জানায়নি। তারা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রথম জানতে পারেন। ১৩ বছর বয়সী অপহৃত শিশুর বাবা স্যামুয়েল মুসা বলেন, তিনি শুধু প্রার্থনা করছেন তার ছেলে উদ্ধার হওয়া শিশুদের মধ্যে থাকুক। ছেলেকে হারানোর পর থেকে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এ ঘটনাটি নাইজেরিয়ায় আবারও বড় ধরনের গণঅপহরণের ভয়াবহ পরিস্থিতি সামনে এনে দিয়েছে, যেখানে শতাধিক শিশু এখনো অজ্ঞাত স্থানে বন্দি।
সূত্র- আলজাজিরা।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর