• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ সেকেন্ড পূর্বে
জিসান নজরুল
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:১৩ রাত

শিক্ষকদের গাফিলতিতে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত ইবির ১২ শিক্ষার্থী

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

শিক্ষকদের গাফিলতিতে নির্দিষ্ট একাডেমিক অর্ডিন্যান্স (বিধি) অনুসরণ না করেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অন্তত ১০৭ জন শিক্ষার্থী অনার্স (সম্মান) সম্পন্ন করেছেন। বিভাগের তৎকালীন সভাপতিদের অবহেলা, ক্রেডিট বণ্টনে ত্রুটি এবং নিয়মিত একাডেমিক অর্ডিন্যান্স অনুসরণ না করার কারণে অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের কলা অনুষদের জন্য নতুন একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। এ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ওই শিক্ষাবর্ষে মোট কোর্স ক্রেডিট থাকার কথা ছিল ১৩৬। কিন্তু ইংরেজি বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. মোছা. সালমা সুলতানা নতুন অর্ডিন্যান্সটি অনুসরণ না করে পূর্বের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স অনুসরণ করেন। ওই অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী মোট কোর্স ক্রেডিট ছিল ১২৮। তার ভিত্তিতেই কোর্স বণ্টন করা হয়, যার ফলে বাদ পড়ে অতিরিক্ত ১২ ক্রেডিট বা ৪টি কোর্স।

এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ৮টি ভাইভা নেওয়ার কথা থাকলেও পরে তা কমিয়ে ৬টি কোর্সে সীমাবদ্ধ করা হয়। শিক্ষার্থীরা অনার্স সম্পন্ন করার পর ফল প্রকাশ করতে গিয়ে যখন ২০১৯-২০ অর্ডিন্যান্স অনুসরণ না করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। ফল প্রকাশে বিলম্ব হলে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ডিন ও উপাচার্যের পরামর্শ এবং লবিংয়ের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

ফলাফল প্রকাশে পুরনো অর্ডিন্যান্স অনুসরণ করায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী মানোন্নয়ন (ইমপ্রুভমেন্ট) পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এছাড়া কলা অনুষদের অন্যান্য বিভাগগুলো সঠিক অর্ডিন্যান্স অনুসরণ করলেও ইংরেজি বিভাগ তা করেনি। এতে বিভাগের ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, অনার্স ৪র্থ বর্ষ শেষে পূর্ববর্তী সকল সেমিস্টারের মানোন্নয়ন পরীক্ষা একত্রে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে শিক্ষার্থীর গড় সিজিপিএ ৩.০০ (বি-মাইনাস) এর নিচে হতে হবে এবং প্রতিটি কোর্সেও সিজিপিএ ৩.০০ (বি-মাইনাস)-এর নিচে থাকতে হবে। তবে ‘জুলাই আন্দোলন’–এর পর শিক্ষার্থীরা সেশনজট নিরসনের দাবিতে চাপ প্রয়োগ করলে তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাশিদুজ্জামান শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন যে ৪র্থ বর্ষ শেষে একত্রে সকল মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীর গড় সিজিপিএ যাই হোক না কেন, কোনো কোর্সে বি-মাইনাস (৩.০০)-এর নিচে থাকলেই সে কোর্সের মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে পারবে। তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ৩য় বর্ষ থেকে আর কোনো মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।

কিন্তু ৪র্থ বর্ষ শেষে শিক্ষার্থীরা মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদন করলে বিভাগ জানায় যে, ২০১৮-১৯ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করায় যেসব শিক্ষার্থীর গড় সিজিপিএ বি-মাইনাস (৩.০০)-এর বেশি, তারা মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। এতে যাদের সিজিপিএ বি-মাইনাস (৩.০০) বেশি তারা তাদের বিদ্যমান ফলাফল নিয়ে বিপত্তিতে পড়েছেন।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার কারণে কম কোর্স পড়ানো এবং মান উন্নয়ন পরীক্ষা থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। বর্তমান রেজাল্ট অনেকেরই কম, যা কোন কাজে আসবে না। আমরা চরম বৈষম্য এবং প্রতারণার শিকার হচ্ছি। আমাদের মান উন্নয়ন পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হোক।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মিয়া রাশিদুজ্জামান বলেন, ‘সেশনজট নিরসনে চাপ প্রয়োগ করায় আমি এ কথা বলছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের ফলাফল প্রকাশের সময়ে অর্ডিন্যান্স লঙ্ঘনের বিষয়টি উঠে আসে।’ এদিকে আরেক অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মোছা: সালমা সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘পূর্বের সভাপতিদের ত্রুটির কারণে শিক্ষার্থীরা এ ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার বিভাগের একাডেমিক সভা করে ডিন স্যারের সুপারিশ নিয়ে উপাচার্য বরাবর পাঠিয়েছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ও উপাচার্যের সুপারিশ হলে পরীক্ষা গ্রহণ করতে বাঁধা নেই।’

এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কল্যাণ বিবেচনায় উপাচার্য মহোদয়ের কাছ থেকে ফলাফল প্রকাশের অনুমোদন নেওয়া হয়। পরবর্তীতে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে সেটির জন্যও সুপারিশ করেছি।’

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘মানোন্নয়ন পরীক্ষার বিষয়টি অর্ডিন্যান্সের সাথে সাংঘর্ষিক। এছাড়া আগের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এ নিয়ে বিভাগের সঙ্গে বসবো।’

সাজু/নিএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]