আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিল বকেয়া থাকা প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ কিংবা টেলিফোনসহ কোনো সরকারি সেবা বিল মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই পরিশোধ না থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হবে। এতে তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা হারাবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সম্প্রতি ইসির জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, পরিপত্রে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২-এর সংশ্লিষ্ট ধারার উল্লেখ করা হয়েছে।
ঋণ খেলাপি ও ফেরারি আসামিরাও অযোগ্য
আরপিও অনুযায়ী আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি, প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তি, কিংবা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণ বা কিস্তি মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সরকারি সেবা বিল বকেয়া থাকলে বাতিল হবে মনোনয়ন
পরিপত্রে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই প্রদেয় সরকারি টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি কিংবা অন্য কোনো সেবা প্রদানকারী সংস্থার বিল পরিশোধে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
আয়কর রিটার্ন ও হলফনামা বাধ্যতামূলক
প্রত্যেক মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থী কর্তৃক স্বাক্ষরিত হলফনামা দাখিল করতে হবে। একই সঙ্গে সর্বশেষ করবর্ষের আয়কর রিটার্নের কপি সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে ইসি।
লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তিদের পদত্যাগ জরুরি
প্রজাতন্ত্র বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, কিংবা সরকারের ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে সার্বক্ষণিক কোনো পদে থাকা ব্যক্তিরা প্রার্থী হতে পারবেন না। উপজেলা, জেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের প্রার্থী হতে হলে পদ্ধতিগতভাবে পদত্যাগ করতে হবে।
একসঙ্গে তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হলে সব মনোনয়ন বাতিল
আরপিওর ১৩ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি একসঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থী হতে পারবেন। এর বেশি আসনে মনোনয়ন দিলে সব আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল হবে।
নির্বাচনি ব্যয়ের জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব বাধ্যতামূলক
নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনি এজেন্টকে তফসিলি ব্যাংকে পৃথক হিসাব খুলতে হবে। ব্যক্তিগত ব্যয় ছাড়া সব নির্বাচনি ব্যয় ওই হিসাব থেকেই পরিশোধ করতে হবে।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ব্যয় ও সম্পদের বিবরণী জমা
নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচনি ব্যয়ের সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী (ফরম-২০) এবং প্রার্থীর সম্পদ, দায়-দেনা ও বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের বিবরণী (ফরম-২১) দাখিল করতে হবে।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচার চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর