ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল নামের এক যুবকের নাম সামনে এসেছে।
জানা গেছে, ফয়সাল করিম মাসুদের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে, কেশবপুর কলেজের পূর্ব পাশে। তার পিতার নাম হুমায়ুন কবির। তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ও তার পরিবার এলাকায় বসবাস করছেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ফয়সাল করিম মাসুদ ঢাকার আদাবর থানাধীন পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি এলাকায় বসবাস করছেন। তার বিরুদ্ধে আদাবর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি আদাবর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।
এর আগে গত মাসে আদাবর এলাকায় একটি স্কুলে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় ফয়সাল করিম মাসুদ গ্রেপ্তার হন। তবে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি জামিনে মুক্তি পান বলে জানা গেছে।
হাদির ওপর গুলির ঘটনার পরপরই ফয়সালের পিসিআর রিপোর্টসংক্রান্ত তথ্য ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর বাউফলের কেশবপুর এলাকায় তার গ্রামের বাড়ি ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ফয়সালের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তাদের পূর্বের জমিতে নতুন একটি ঘরের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, ওই ঘর তাদের পরিবারের নয়। তারা বহু আগেই সব জমিজমা বিক্রি করে ঢাকায় চলে গেছেন। বর্তমানে যারা জমি কিনেছেন, তারাই সেখানে ঘর নির্মাণ করছেন।
স্থানীয়রা জানান, ফয়সাল ও তার পরিবার বহু বছর ধরে গ্রামে আসেন না। তার বাবা হুমায়ুন কবির পড়াশোনা শেষ করার পর থেকেই ঢাকায় বসবাস করছেন। ফয়সালকে তারা কখনোই এলাকায় দেখেননি বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদ হোসেন বলেন, “ফয়সালের পরিবার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে গ্রামে আসে না। তার বাবা ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত এবং পরিবারসহ সেখানেই থাকেন। ফয়সালের জন্মও ঢাকায়। গ্রামে তাকে কখনো দেখা যায়নি। তার বাবা যেটুকু জমি ভাগে পেয়েছিলেন, সেটুকুও বিক্রি করে চলে গেছেন।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকার কালভার্ট রোডে প্রকাশ্য দিবালোকে শরীফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়। সেখানে নিউরো সার্জারি বিভাগে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করা হয়।
পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
অন্যান্য... এর সর্বশেষ খবর