জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পাকিস্তানের পতাকা অঙ্কনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী প্রকল্প’-এর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ বিন বাসিত। তিনি তাদের ‘রাজাকারের প্রডাকশন’ বলে আখ্যা দেন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পাকিস্তানের পতাকা আঁকাকে ঘিরে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে এ মন্তব্য করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাতে প্রধান ফটকে পাকিস্তানের পতাকা আঁকার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডি বাধা দেয়। এ সময় আস-সুন্নাহ হলের এক শিক্ষার্থী পতাকা আঁকায় আপত্তি জানালে তাকে ‘পাকিস্তানের দোসর’ বলে তেড়ে যাওয়া হয়। পরে হলের শিক্ষার্থীরা বাসে করে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে চাইলে তাদের চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ছাত্রদলের একাধিক নেতা, যার মধ্যে ফরহাদ বিন বাসিতও ছিলেন, উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকেন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বাকবিতণ্ডা ধস্তাধস্তিতে রূপ নেয়।
এ বিষয়ে ফরহাদ বিন বাসিত বলেন, “পাকিস্তানের পতাকা সবসময় আমাদের পায়ের নিচেই থাকবে। এটা আঁকতে কেন অনুমতি লাগবে? ইসরায়েলের পতাকা আঁকার সময় তো কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।”
হলের শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রদলেরই আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, “আমি নিজেও আস-সুন্নাহ মেধাবী প্রকল্পে অবস্থান করছি। তাহলে আমিও কি রাজাকার বা শিবির?”
এর আগে, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাতভর প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালান। এ সময় উপাচার্যের গাড়িও অবরোধ করে রাখা হয়। পরে ভোর পাঁচটার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করলে উপাচার্যসহ প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো ধরনের পতাকা অঙ্কনের ক্ষেত্রে পূর্বানুমতি প্রয়োজন। কিন্তু তারা অনুমতি ছাড়াই পতাকা আঁকতে শুরু করে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস ক্যাম্পাস থেকে বের হতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।”
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর