প্রেম ও অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে ধারাবাহিক হুমকি, হয়রানি ও সামাজিকভাবে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম দিয়া চৌধুরী। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ব্যক্তি রকি আহমেদ, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে জাতীয় দৈনিক কালবেলা-তে কর্মরত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী দিয়া চৌধুরী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন, 'হলে ওঠা সংক্রান্ত একটি সংবাদকে কেন্দ্র করে রকি আহমেদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত হওয়ার পর একপর্যায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার হল সংক্রান্ত বিষয় ‘ম্যানেজ’ করে দেওয়ার কথা বলে ব্যক্তিগত তথ্য নেন। পরবর্তীতে হলের সিট নিশ্চিত হওয়ার পর রকি আহমেদ বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যক্তিকে নিজের প্রভাবাধীন দাবি করে ভয়ভীতি দেখান বলে অভিযোগ করেন তিনি।' জয়া চৌধুরীর ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, 'হলে ওঠার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি বারবার তার সঙ্গে দেখা করতে, বাইরে ঘুরতে এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা জোর করে বলতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে সেখানে তাকে শারীরিকভাবে স্পর্শ করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তার অজান্তে বিভিন্ন ছবি তোলা হয় বলেও দাবি করেন ভুক্তভোগী। তিনি জানান, এসব ঘটনায় আপত্তি জানিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করতে চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেন, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই তাকে হুমকি দেওয়া হয়—প্রেম কিংবা অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া, বিভাগে বদনাম ছড়ানো, মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও টিউশন থেকে সরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ করেন জয়া।'
পরবর্তীতে উভয় পক্ষের অভিযোগের পর প্রক্টর অফিসে বিষয়টি মীমাংসা করা হলেও, কিছুদিন পর আবার হল সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশ করে তাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ করেন জয়া চৌধুরী। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি আবার প্রক্টর অফিসের শরণাপন্ন হন এবং ন্যায়বিচার না পেলে আত্মহত্যার আশঙ্কার কথাও জানান।
সবশেষে উপায় না পেয়ে দিয়া চৌধুরী কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে তিনি ফেসবুক পোস্টে বলেন, 'সাংবাদিকতার মতো একটি সম্মানজনক পেশাকে ব্যবহার করে তাকে তিলে তিলে শেষ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন এবং বিষয়টিকে কোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে রূপ না দেওয়ার আহ্বান জানান।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ‘তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দু’জনকে ডেকে আমি বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে রকি আবার সংবাদ প্রকাশ করে কিছুটা বাড়াবাড়ি করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রকি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই। গতকাল অভিযোগকারী আমাকে ফোন দিলে আমি তাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে সাংবাদিক রকি আহমেদ বলেন, 'সেই মেয়ে একসাথে একাধিক প্রেম করেছে। আমার থেকে টাকাও হাতিয়ে নিছে। প্রক্টরের কাছো অভিযোগ দেওয়া হয়েছিলো এ বিষয়ে। আমি আমার সম্পূর্ণ মন্তব্য ফেসবুকে কিছুক্ষণের মধ্যে আপলোড করবো।'
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর