দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে। প্রিয় নেতা তারেক রহমান আসছেন দেশের মাটিতে। আর তাকে বরণ করতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ছুটছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূলের কর্মীরা। শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিমানে, বিশেষ ট্রেনে ধরেছেন ঢাকার পথ। আর তৃণমূলের নেতারা চেয়ার কোচ, বাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে সড়ক পথে আজ (বুধবার) রওনা দিচ্ছেন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে কমপক্ষে এক লাখ লোক ঢাকায় যাবেন তারেক রহমানকে বরণ করতে। দলের পক্ষ থেকে ভাড়া করা ট্রেন, বাস, মাইক্রো ও হাইয়েসে করে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা যাচ্ছেন তারা। আবার কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ঢাকায় যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দেশের মাটিতে পা রাখবেন তারেক রহমান। এদিন ঢাকার পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় তাকে দেওয়া হবে সংবর্ধনা। যেখানে লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে অন্তত ১ লাখ মানুষ তাদের প্রিয় নেতাকে বরণ করতে ঢাকায় যাবেন। তারা ইতিমধ্যে যাত্রা শুরু করে দিয়েছেন বাসে ট্রেনে কোচে।
তিনি ২০-২২ বগির একটি ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন জানিয়ে বলেন, পরিস্থিতি এমন যে নেতাকে বরণ করতে যাওয়ার জন্য কেউ কারও দিকে তাকিয়ে নেই। দলীয় বা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় সবাই ঢাকা ছুটছেন। নেতা কর্মীরা সোমবার থেকে যাত্রা শুরু করেছেন। তিনি নিজেও যথাসময়ে ঢাকায় পৌঁছে যাবেন বলে জানান।
চট্টগ্রাম–৯ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিযান বলেন, তারেক রহমানকে দেখার জন্য সারা দেশের মানুষ উদ্গ্রীব। তাই তাকে স্বাগত জানাতে সবাই ঢাকা ছুটছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া বলেন, আমাদের হাজার নেতাকর্মী ইতিমধ্যে ঢাকায় চলে গেছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে অন্তত ১৫ থেকে ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন। এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক বেশি বাস ও হাইয়েস ভাড়া করা হয়েছে। আরও বাড়তে পারে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর বলেন, দীর্ঘ ১৭–১৮ বছর পর দেশের মানুষ তারেক রহমানকে সরাসরি দেখতে পাবেন। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আনন্দিত। তারেক রহমানকে একনজর দেখতে সারা দেশের মানুষ ঢাকায় ছুটছেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বরণ করার জন্য মহানগর থেকে অনেকে ঢাকায় চলে গেছেন, অনেকে পথে আছেন। দুটি ট্রেনের সম্পূর্ণ, আরেকটির অর্ধেক টিকেট পাওয়া গেছে। পাশাপাশি অন্য ট্রেন থেকেও টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহানগর থেকে ১০০টি বাস ও দেড়শ মাইক্রো ও হাইয়েস ভাড়া করা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকেও নিজ উদ্যোগে নেতাকর্মীরা বাস–মাইক্রোতে লোকজন নিয়ে যাবেন। এ রকম আরও ১০০ বাস ও শতাধিক মাইক্রো যাবে। আসলে যে হারে মানুষ যেতে চাচ্ছে গাড়ি না পাওয়ায় সেভাবে আমরা সাপোর্ট দিতে পারছি না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁঞা বলেন, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে ভাড়া করা একটি ট্রেন ঢাকা যাচ্ছেন। হয়তো বাকিরা অন্য ট্রেনে টিকিট কেটেছেন।
নগরীর দাম পাড়াস্থ সৌদিয়া কাউন্টারের ব্যবস্থাপক নুরে আলম জানান, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বরের বাসের টিকিট এক সপ্তাহ আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। এই দুদিনের জন্য অতিরিক্ত বাস নামানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অন্যান্য কোম্পানিতেও একই অবস্থা বলে তিনি জানান।
কারামুক্ত হয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়েন তারেক রহমান। এরপর দীর্ঘ সময় তিনি লন্ডনে অবস্থান করে দল পরিচালনা করেন। ২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবরণ করলে তাঁকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সর্বশেষ খবর