ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের শেষ দিনে বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমসের (নগর বাউল) নির্ধারিত সংগীতানুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করা হয়। এতে ২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, দুই দিনব্যাপী এই বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনীর সমাপনী দিনে ফরিদপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে জেমসের সংগীত পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। আয়োজক কমিটি বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকদের জন্যও বাইরে থেকে অনুষ্ঠান উপভোগের ব্যবস্থা রাখে। তবে শুরু থেকেই একদল বহিরাগত স্কুল প্রাঙ্গণের ভেতরে ঢুকে সরাসরি অনুষ্ঠান দেখার দাবিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাতে জেমসের অনুষ্ঠান শুরুর আগমুহূর্তে বহিরাগতরা জোরপূর্বক অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং অনুষ্ঠানস্থল দখলের চেষ্টা চালায়। শিক্ষার্থী ও আয়োজক কমিটির সদস্যরা প্রতিরোধ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা সরে যেতে বাধ্য হলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাত আনুমানিক ১০টার দিকে অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ডা. মুস্তাফিজুর রহমান শামীম জেলা প্রশাসনের নির্দেশের কথা উল্লেখ করে জেমসের অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা দেন। হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও জানান আয়োজকরা।
এদিকে, ঘটনাস্থলের খুব কাছেই জেলা পুলিশ লাইন্স ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় থাকলেও হামলার সময় প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি—এমন অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, শুরু থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক রাজীবুল হাসান খান বলেন, “জেমসের অনুষ্ঠান সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। দুই দিন ধরেই আয়োজন সুন্দরভাবে চলছিল। কিন্তু শেষ দিনে বহিরাগতদের হামলার কারণে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হই।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় ও বর্ষপূর্তি পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শপথবাক্য পাঠ এবং বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষ উদ্যাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে র্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জেমসের সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর