মিরপুর হাউজিং এস্টেট, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিন ও দপ্তরের তিন কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ ও জালিয়াতির প্রমাণপত্র তুলে ধরে ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. হাফিজ আল হোসেন।
গত রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে রাজস্থানী ঢাকার জাতীয় ক্লাবের তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মো. হাফিজ আল হোসেন বলেন, তিনি মিরপুর হাউজিং এস্টেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত। তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিন এবং দপ্তরের অপর তিন কর্মচারী মো. শহীদ উল্লাহ (অফিস সহকারী), মো. তাজুল ইসলাম (অফিস সহকারী) ও সুফিয়া বেগম (দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক পিয়ন, অস্থায়ী)-এর দুর্নীতি, ঘুষ ও জালিয়াতির খবর জানতে পারেন। এর ফলে উল্টো তাঁরা দুর্নীতির দায় তাঁর উপর চাপিয়ে অফিসিয়ালভাবে তদবির করে তাঁকে ঢাকার বাইরে বদলি, সাময়িক বরখাস্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (মামলা নং-০৩/২০২৫) দায়ের করেন।
তিনি ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিন ও তাঁর তিন সহযোগীর দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রমাণসহ দেশবাসীকে জানাতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
ভুক্তভোগী অফিসার ইনচার্জ, মিরপুর মডেল থানা, ডিএমপি, ঢাকা বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, কার্যকালীন সময়ে তিনি উল্লিখিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও তাঁর তিন সহযোগীর দুর্নীতি ও জালিয়াতির খবর জানতে পারেন। এর জেরে তাঁরা দুর্নীতির দায় তাঁর উপর চাপিয়ে অফিসিয়ালি তদবির করে তাঁকে বদলি, সাময়িক বরখাস্ত এবং বিভাগীয় মামলা দেন। এসব অনিয়মের তথ্য প্রকাশ করলে তাঁকে ঢাকার বাইরে বদলি ও চাকরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিন ও তাঁর সহযোগী মো. শহীদ উল্লাহ।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হুমকি প্রদান করেও তাঁরা থামেননি। অনিয়ম ও জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করে দেওয়ার ভয়ে গত ২৭/১০/২৫ তারিখে প্রধান কার্যালয়ের মাননীয় চেয়ারম্যান, জাগৃক মহোদয়ের নিকট ডি নথির মাধ্যমে অতি গোপনীয়ভাবে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রেরণ করেন। এতে তাঁকে স্বাক্ষর জাল ও ভুয়া ইস্যু নাম্বার দিয়ে বিনা তদন্তে সরাসরি দোষী সাব্যস্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিনের স্বাক্ষরিত অভিযোগটি প্রেরণ করা হয়। প্রেরিত প্রতিবেদনে তাঁর সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা বা তাঁকে যে দায়ে অভিযুক্ত করে শাস্তি চাওয়া হয়েছে, তার কোনো প্রমাণক উল্লেখ করা হয়নি।
মো. হাফিজ আল হোসেন অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিনের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী সুফিয়া বেগম, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক পিয়ন। সুফিয়ার সহযোগিতায় স্থানীয় ভাড়া করা সন্ত্রাসী অফিসের ভিতরে নিয়ে আসা হয়, যা প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাঁর রুমের ভিতর থেকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল তাঁকে সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত ও শারীরিকভাবে আহত করা। কিছু সন্ত্রাসী প্রশাসনিক কর্মকর্তার রুমেই অবস্থান করছিল, কিন্তু রুমের দরজা খোলা থাকা সত্ত্বেও তিনি এসে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
গত ০৯/১১/২৫ তারিখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিনের নির্দেশনায় অফিসের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে এবং তাঁকে কোনো রকম অবগত না করেই রেকর্ড রুমের তালা ভেঙে অন্য একটি তালা লাগিয়ে দেন পিয়ন সুফিয়া। এর ফলে তাঁর অনেক মূল্যবান ডকুমেন্টস এবং নগদ অর্থ না পাওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি অফিসিয়ালভাবে রেকর্ড রুমটি বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব মো. রুহুল আমিন কর্তৃপক্ষের নিয়মনীতি না মেনেই তাঁর স্বার্থ হাসিলের জন্য এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তার নির্দেশে তাঁর রুম থেকে বেরিয়ে আসা স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী তাঁর শরীরে আঘাত করার কারণে তাঁর কোমর/মেরুদণ্ডের নিচের দিকে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তিনি তাঁদের কাউকেই চেনেন না। এরপরই তিনি রেকর্ড রুমটি তালাবদ্ধ করে অফিস থেকে বের হয়ে যান। শারীরিকভাবে আহত হওয়ার কারণে তাঁর কোমর/মেরুদণ্ডের নিচের বাম পাশে প্লেট সরে গিয়েছে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর