আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের কালীগঞ্জে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। মনোনয়নপত্র জমা দানের শেষ দিনে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে একে একে নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। শেষ দিন পর্যন্ত কালীগঞ্জ আসন থেকে মোট আটজন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) (মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের সাথে নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এটিএম কামরুল ইসলামের কাছে এই মনোনয়নপত্র হস্তান্তর করেন।
মনোনয়নপত্র জমা দানকারী প্রার্থীরা হলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ও গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ.কে.এম ফজলুল হক মিলন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য খায়রুল হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস মনোনীত প্রার্থী গাজী রুহুল আমিন কাসেমী, জনতার দল মনোনীত প্রার্থী ও দলের মহাসচিব আজম খান, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আল আমিন দেওয়ান, গণফোরাম বাংলাদেশের কাজল ভূঞা এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) মনোনীত প্রার্থী ডাঃ শফিউদ্দিন সরকার।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এ.কে.এম ফজলুল হক মিলন বলেন, “আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছি। কালীগঞ্জের মানুষ পরিবর্তন চায়। দীর্ঘ সময় ধরে তারা তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেনি। যদি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে এবং মানুষ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে, তবে ইনশাআল্লাহ ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত। আমরা চাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, যেখানে জনমতের সঠিক প্রতিফলন ঘটবে।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী খায়রুল হাসান তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “একটি ইনসাফ কায়েমকারী সমাজ গঠন এবং জনগণের মৌলিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। জামায়াতে ইসলামী সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ছিল এবং আছে। কালীগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ আমাদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। আমরা আশা করি, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।”
মনোনয়নপত্র গ্রহণ শেষে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, “অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রতিটি আবেদন গ্রহণ করেছি। এখন পরবর্তী ধাপ হিসেবে নির্দিষ্ট তারিখে মনোনয়নপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। আমরা একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে কোনোভাবে লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে। আমি সকল প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করেন।”
উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীদের সাথে দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থীরা চলে যাওয়ার পর নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। এখন সবার নজর আসন্ন যাচাই-বাছাই এবং প্রতীক বরাদ্দের দিকে। নির্বাচনী মাঠে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে কারা টিকে থাকেন, তা দেখার অপেক্ষায় এখন কালীগঞ্জবাসী।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর