ঘাম ঝরা মানেই কি ওজন কমা!

প্রকাশিত: ০৫ আগষ্ট ২০১৭, ০৮:২৩ এএম

শরীর থেকে ঘাম ঝরা মানেই আপনার মেদ কমে যাচ্ছে, এটা ভুলেও ভাববেন না। জ্বর হলে ও জ্বর ছাড়ার সময় দেহ তাপমাত্রা দ্রুত হারায় ও প্রচুর ঘাম হতে পারে। এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। আবার ব্যায়াম বা ভারী কায়িক শ্রমেও ঘাম হবেই। কারও কারও উদ্বেগ বা টেনশনে ঘাম হয়। সাধারণত উদ্বেগজনিত রোগে হাত-পায়ের তালু বেশি ঘামে। ওজনাধিক্য ও স্থূল ব্যক্তিরাও বেশি ঘামেন। এটা দেহের বিপাক ক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। তাই ঘাম ঝরা মানেই কিন্তু ওজন কমা নয়।

বাড়িতে ফ্যান বন্ধ করে এক্সারসাইজ় করলে ঘাম হয় বেশি। জিমে গেলে ইন্সট্রাকটারের পরামর্শ অনুযায়ী ১০ মিনিট ট্রেডমিল, ২০ মিনিট সাইক্লিং ও ১০ মিনিট ক্রসট্রেনার করলে কুলকুল করে ঘাম বেরিয়ে আসে শরীর থেকে। মনটা আনন্দে ভরে যায়। মনে হয়, এই ঘাম আসলে শরীরের বাড়তি মেদ গলে বেরিয়ে আসা।

শরীরকে ঠান্ডা রাখতে ঘাম হয়। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ঘাম। এক্সারসাইজ় করার সময় রক্ত চলাচল দ্রুত হতে শুরু করে। শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। বেড়ে যায় তাপমাত্রা। সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ঘামের উপস্থিতি। যাঁরা পর্যাপ্ত আহার করেন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁরা ঘামেন বেশি।

সুতরাং, এই ঘামকে মেদ গলে যাওয়া বলে মেনে নেওয়া ভুল। বরং বলা ভালো ক্যালোরি গলে গেলে, তাতে উপস্থিত ফ্যাট থেকে শক্তি সঞ্চার করে শরীর। ফলত, এক্সারসাইজ় করার সময় ঘাম ও ক্যালোরি গলে যাওয়ায় ওজন কমতে পারে। ফলে ফ্যাটের পরিমাণ যা ছিল তাই থাকে।
আমাদের শরীরে ৩ ধরনের ফ্যাট বা মেদ থেকে। ত্বকের নিচে উপস্থিত ফ্যাটকে বলে সাবকিউটেনাস ফ্যাট । শরীরের ভিতরের ফ্যাটকে বলে ভিসারাল ফ্যাট এবং পেশিতে থাকে এক ধরনের ফ্যাট।

শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হলে সেটিকে সময়ের মধ্যে ঝরিয়ে ফেলা অত্যন্ত জরুরি। না হলে পরবর্তীকালে বিপদ হতে পারে। যাঁরা ডায়েট করেন, বা রোগা হওয়ার জন্য সারাদিন কিছুই খান না, তাঁদের শরীরে মেদ ঝরে না। বরং আরও বেশি জমতে থাকে ফ্যাট। কিন্তু দেহ কসরতের সময় এই ফ্যাটকেই এনার্জিতে পরিণত করে আমাদের শরীর।

খুব এক্সারসাইজ় করলে ঘামও খুব হয়। কিন্তু এর মানে এটা নয় শরীরের মেদের পরিমাণ কমে যাবে। এক্সারসাইজ়ের সময় শরীর ক্যালোরি গলায় আর ফ্যাট এনার্জি বা শক্তি সঞ্চার করে। এনার্জির ঘাটতি দেখা দিলে শরীর দুর্বল হতে পারে। পরদিন পর্যাপ্ত আহার না করলে অসুস্থ হতে পারে মানুষ। ফ্যাট লস হতে পারে প্রোটিন ও ফ্যাট খাওয়ার পরিমাণ যদি সঠিক থাকে। কার্ডিও এক্সারসাইজ় করার পর এই ধরনের খাবার খেলে ভালো ফল পেতে পারেন। অন্যদিকে যোগা বা পাইলেটসের মতো এক্সারসাইজ়ে কসরত যেহেতু কম, এনার্জির প্রয়োজন কম, তাই ফ্যাট গলার পরিমাণও কম।

ফলত, জিম বা যোগব্যায়াম করলে ঘাম হয় শরীর ঠান্ডা করার জন্য। এর সঙ্গে ফ্যাট কমার কোনও সম্পর্ক থাকে না। বরং যাঁরা নিয়মিত দেহ কসরত করেন, পর্যাপ্ত ফ্যাট খাওয়া তাঁদের পক্ষে স্বাস্থ্যকর। জিমে ১ ঘণ্টা এক্সারসাইজ়ের পর যদি একটা মাফিন কেক খান, আপনার ফ্যাট বাড়বে না। উলটে শরীরে আরও শক্তি বাড়বে।-সুত্রঃ টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: