জবির ২য় ক্যাম্পাস কেরানীগঞ্জে

প্রকাশিত: ১৯ আগষ্ট ২০১৭, ০৬:৩০ পিএম

মাসুম বিল্লাহ,জবি থেকে: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২য় ক্যাম্পাস তৈরি হতে যাচ্ছে কেরানীগঞ্জ। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের মুরাদনগরে এ ক্যাম্পাস হবে। নতুন ক্যাম্পাসের জন্য প্রায় আড়াইশ একর জমি নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠানো হলে তা মঞ্জুর করা হয়।

বিশ্বিবিদ্যালটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসে জমি দেখবেন। তিনি আরো বলেন, এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশি দূরে নয় । আশা করি দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অতি দ্রুত শুরু হয়ে যাবে। বর্তমান ক্যাম্পাস আগের জায়গায়ই থাকবে এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস কেরানীগঞ্জে করা হবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা।’

জগন্নাথ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত ২০০৫ সালে । প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যলয়টি নানা সমস্যায় জর্জারিত । তার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা এর কোন আবসন ব্যবস্থা নেই । কলেজ আমলে ১০টি হলের দেখা পাওয়া গেলেও বর্তমানে নজরুল ইসলাম হল ছাড়া অন্য কোন হল বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিনে নেই । নজরুল হলে শুধু মাত্র কর্মচারীরা থাকেন । বাকি হল গুলোর মধ্যে ৪টি ব্যাক্তি দখলে ১টি দক্ষিন সিটি কর্পোরেসনের দখলে । এছাড়া অন্য হলগুলো ব্যক্তি কেন্দ্রিক দখল করে
ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করছেন । বর্তমানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো হল নেই। আবাসন ছাড়াই এক যুগ পূর্ণ করল বিশ্ববিদ্যালয়টি। হলের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

তবে গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে হলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তীব্র আন্দোলন করলে সরকারের নজরে আসে বিষয়টি। তখন ছাত্রদের পক্ষ থেকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জায়গায় হল নির্মানের দাবি উঠে। অবশেষে ৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওইদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে জানতে চান, হলের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেরানীগঞ্জে ছাত্রদের জন্য আবাসিক হল করে দেয়া হবে।

সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ২৫ বিঘা জমি আছে। আর ছাত্রী হল হবে বর্তমান ক্যাম্পাসের পাশেই। বর্তমান ক্যাম্পাসের মধ্যে ২০তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রিকে বলেন, এটা কোন ধরনের পরিকল্পনা? ছাত্ররা থাকবে কেরানীগঞ্জে, এক জায়গায় প্রশাসনিক ভবন, অন্য জায়গায় ছাত্রী হল? এটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থা হতে পারে না। এটা অস্থায়ীভাবে চলতে পারবে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য একটি পরিপূর্ণ পরিকল্পনা প্রয়োজন। সেই ভাবে পরিকল্পনা করুন। একটি অখন্ড জমিতে আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবন, টিএসসিসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যা যা দরকার তা যেন করা যায়।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জমি দেখার জন্য ৭ দিনের সময়সীমা বেধে দেওয়া হয় । উপাচার্য ড. মীজানুর রহমনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টিম কেরানীগঞ্জে প্রায় ২৫০ একর জমি নির্ধারণ করেন । এবং ক্যাম্পাস নিমার্নের অন্যান্য যাবতীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নিজাম উদ্দিন শামীম বলেন, কেরানীগঞ্জে জবির দ্বিতীয় ক্যম্পাস তৈরী করা হবে শুনে ভালো লাগছে । নতুন ক্যাম্পাস তৈরি হওয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও প্রচেষ্ঠা সফল হবে।

বিডি২৪লাইভ/এস এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: