সীমা এখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা
সীমা (ছদ্মনাম) মিয়ানমারের মংডুতে ধর্ষণ শিকার হন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পাঁচ জন সদস্যের দ্বারা।
এরপর নভেম্বরের নয় তারিখে ১২ দিন পায়ে হেটে কোনমতে পালিয়ে আসেন বাংলাদেশে। কিন্তু সীমা তখনো জানতো না ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে আসার পর যখন তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ডাক্তার তাকে বলে দেন এখন সন্তান নষ্ট করলে তার জীবনের ঝুঁকি তৈরি হবে।
সীমা এখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার সাথে যখন আমার দেখা হল তিনি উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্পে একটি পলিথিনে ঘেরা ঘরে শুয়ে ছিলেন।
এখানে তাকে কে দেখাশোনা করে? তার সংক্ষিপ্ত উত্তর ছিল, আশেপাশের ঘরের মানুষ।
শিবিরে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ধর্ষণের শিকার বেশ কিছু রোহিঙ্গা নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
২০১৭ সালের অগাস্টের শেষ সপ্তাহে মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে যে কয়েক লাখ মানুষ এসে আশ্রয় নেয় তাদের বেশির ভাগ ছিল নারী এবং শিশু।
বাংলাদেশে আসার ছয় মাস পর কেমন আছে এসব নারীরা?
উখিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ পর্যন্ত যত রোহিঙ্গা এসেছে তার মধ্যে ৫২% নারী। এদের মধ্যে দুই লক্ষ ৯৪ হাজার নারী সন্তান ধারণে সক্ষম।
মংডুর নাইসং এলাকায় বাড়ী ছিল সালমার (ছদ্মনাম)। তিনিও ধর্ষণের শিকার হন মিয়ানমার সৈন্যদের দ্বারা। জানালেন, স্বামী দুই মাস হল কাজের খোঁজে গিয়ে এখনো ফেরেনি। ধর্ষণের পর মানসিক যে কষ্ট এবং গ্লানি সেটা কাওকে বোঝানো যাবে না।
সেই মানসিক চাপরে সাথে যোগ হয়েছে স্বামীর লাপাত্তা হয়ে যাওয়া। এখানে আসার পর তিনি কোন চিকিৎসা নিয়েছেন? জবাবে জানান, (স্থানীয়) ক্লিনিকে গেলে তারা ইনজেকশন দিয়েছিল, পরে আবার যেতে বলেছিল কিন্তু আমি আর যাইনি।
বেসরকারি সংস্থা রিসার্চ ট্রেনিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল, যারা রোহিংগা নারীদের নিয়ে কার করে, তার একজন কর্মকর্তা মিজ শারমিন বলছিলেন, এসব নির্যাতিত নারীদের এখন দরকার কাউন্সেলিং অর্থাৎ মানসিক পরামর্শ। যাতে করে তারা এই ট্রমা থেকে বের হয়ে আসতে পারে। একই সাথে দরকার ফলো-আপ যাতে করে তাদের কোন শারীরিক অসুবিধা না হয়। কিন্তু সেটা তারা করে না।
সালমা এবং সীমার মত আরো অন্তত ১০ জন মেয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে যারা মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সেই ঘটনার ছয় মাস পরও তার ক্ষতচিহ্ন এখনো স্পষ্ট তাদের মনে, যার প্রভাব তাদের শরীর ও মনে প্রভাব ফেলেছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলছেন, তারা ক্যাম্পের ভিতরে নারী কর্মী পাঠিয়ে এসব তথ্য সংগ্রহ করেন কারণ ঐ নারীরা প্রকাশ্যে এসব কথা বলতে লজ্জা পান। ফলে চিকিৎসা দেওয়াটাও দুষ্কর হয়ে পড়ে। বিবিসি
বিডি২৪লাইভ/এএইচআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: