যে কারণে খড়ম পরেন সাধু-সন্ন্যাসীরা!

খড়ম একপ্রকার কাঠের পাদুকা। হিন্দি "খড়ৌঙ" শব্দটি থেকে বাংলায় "খড়ম" শব্দটির উৎপত্তি। সংস্কৃতে খড়ম "পাদুকা" নামে পরিচিত। হিন্দুধর্মে খড়মের ব্যবহার সুপ্রচলিত। হিন্দুরা খড়মকে দেবতা ও শ্রদ্ধেয় সাধুসন্তদের পদচিহ্নের প্রতীকও মনে করেন। হিন্দুধর্মের পাশাপাশি জৈনধর্মেও ভিক্ষাজীবী সন্ন্যাসী ও সাধুসন্তেরা খড়ম ব্যবহার করে থাকেন। হিন্দুদের মহাকাব্য রামায়ণে খড়মের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
একখণ্ড কাঠ পায়ের মাপে কেটে খড়ম তৈরি করা হয়। সম্মুখভাগে একটি বর্তুলাকার কাঠের গুটি বসিয়ে দেয়া হয় যা পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও পাশের আঙ্গুলটি দিয়ে আঁকড়ে ধরা হয়। বর্তমানে পা আটকে রাখার জন্য কাঠের গুটির পরিবর্তে রাবার খণ্ড ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন কালে খড়মের উদ্ভব। এক সময় দেবতার তুষ্টির জন্য পাদুকা পূজার প্রচলন ছিল।
ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে কাঠের পাদুকা বা খড়ম। বাংলাদেশেও এক সময় খড়মের প্রচলন ছিল। জমিদার ও স্থানীয় ভূ-স্বামীরা পরতেন খড়ম। এখন এই ধরণের পাদুকা নেই বললেই চলে। তবে ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন কিছু সাধু-সন্ন্যাসী। এখনো তাদের অনেকের পায়ে খড়ম শোভা পায়।
তবে পৃথিবীর প্রাচীনতম খড়ম পাওয়া গিয়েছিল ভারতের বাইরে। যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনে প্রাচীনতম এই খড়ম পাওয়া গিয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০০ থেকে ৮০০০ বছর আগে। বর্তমানে চামড়া কিংবা ফোম জুতো তৈরির কাজে ব্যবহৃত হলেও অতীতে এই দুই উপকরণ মোটেই সহজলভ্য ছিল না। বরং কাঠের প্রাচুর্য ছিল গোটা বিশ্বেই। স্বাভাবিকভাবেই কাঠই বেছে নেওয়া হয় জুতো তৈরির প্রধানতম উপকরণ হিসেবে।
দীর্ঘস্থায়ী, কম খরচে তৈরি করা হতো বলে কাঠের তৈরি জুতোরই প্রচলন ছিল সব জায়গায়। তা ছাড়া পশুর চামড়া দিয়ে তৈরি জুতো ব্রাক্ষ্ণণ্যবাদীদের কাছে অস্পৃশ্য বলে বিবেচিত হতো। সেই অর্থে কাঠই পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হত। তাই তারা জুতো হিসেবে বেছে নিতেন খড়ম। আর এখন তো জুতো তৈরিতে প্রচুর পরিমানে গরুর চামড়া ব্যবহার করা হয়। আর সনাতনধর্মীদের কাছে গরু 'গোমাতা' বলে বিবেচিত। এ কারণে চামড়ার তৈরি জুতো এড়িয়ে চলেন সাধু-সন্নাসীরা।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: