সৌদি রাজপ্রাসাদের বাইরে গোলাগুলির নেপথ্যে
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে শনিবার রাতে রাজা সালমানের প্রাসাদের কাছে ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে বিভিন্ন বার্তা সংস্থায় খবর প্রকাশিত হয়। সেইসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীদের ক্যামেরায় তোলা ভিডিও ক্লিপও মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর দিয়েছে রেডিও তেহরান।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, শনিবার রাতে সৌদি রাজপ্রাসাদ ও এর আশপাশে কি ঘটেছিল? কোনো কোনো বার্তা সংস্থা খবর দেয়, গোলাগুলির শব্দ শোনার পর আতঙ্কিত রাজা সালমান বিন আব্দুলআজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান রাজপ্রাসাদ থেকে পালিয়ে যান।
এসব বার্তা সংস্থা জানায়, সৌদি রাজা ও যুবরাজ মার্কিন সেনাদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকা রিয়াদের নিকটবর্তী একটি সামরিক ঘাঁটিতে পালিয়ে যান। কোনো কোনো সূত্র সৌদি আরবে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে এ ঘটনার ব্যাপারে সৌদি সরকার সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে এবং এই নীরবতা শনিবার রাতের গোলাগুলি সম্পর্কে গুজবের ডালপালা বিস্তারে সহায়তা করছে।
গোলাগুলির ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সৌদি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সেদেশের পুলিশের বরাত দিয়ে দাবি করে, রাজপ্রাসাদের কাছে একটি ড্রোন আকাশে ওড়ার কারণে সেটিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। অথচ বার্তা সংস্থাগুলো বলছে, গোলাগুলির যে শব্দ শোনা গেছে তা একটি ড্রোনকে গুলি করার শব্দ নয় বরং তা ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যাপক ও তীব্র।
তবে এ ঘটনায় যে কারণে আলে সৌদ পরিবার তীব্র আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে তা হলো দেশটিতে সম্ভাব্য অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা। প্রকৃতপক্ষে রাজতান্ত্রিক স্বৈরশাসনে অতিষ্ট সৌদি আরবের জনগণ রাজা সালমানের পতনের খবর শোনার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণছেন। এদিকে যুবরাজ বিন সালমান নিজের ক্ষমতা সংহত করার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে রাজ পরিবারের বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধে যেভাবে দমনপীড়ন চালিয়েছেন তাতে রাজপ্রাসাদেও তার শত্রুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কাজেই খোদ বিন সালমান যেকোনো মুহূর্তে রাজ পরিবারের ভেতর থেকে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের আশঙ্কায় রয়েছেন এবং এরকম দুশ্চিন্তার কারণে কার্যত তার গোটা জীবনই এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলি দৈনিক মাআরিভের বরাত দিয়ে লেবাননের বার্তা সংস্থা আল-আহদ জানিয়েছে, সম্ভবত সৌদি প্রিন্সদের মধ্যে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে শনিবার রাতের গোলাগুলি হয়েছে।
নিজের অন্যায় কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের ভেতরে ও বাইরে সৌদি যুবরাজের শত্রুর অভাব নেই। তিনি একদিকে বহু প্রিন্সকে ক্ষমতাচ্যুত করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে মুসলমানদের প্রধান শত্রু ইহুদিবাদী ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়ে বিন সালমান ফিলিস্তিনিদের হিতাকাঙ্ক্ষী প্রতিটি মুসলমানকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছেন।
সৌদি যুবরাজ দেশে সেক্যুলার নীতি বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে সাধারণ মানুষ ভীষণ ক্ষিপ্ত। এ ছাড়া, দারিদ্র পীড়িত ইয়েমেনের নিরপরাধ মানুষের ওপর হাজার হাজার টন বোমা নিক্ষেপ করেছে সৌদি আরব। নিহত নিরপরাধ মানুষগুলো বিশেষ করে ইয়েমেনের শিশুদের আর্তচিৎকার যুবরাজের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
শনিবার রাতের গোলাগুলির শব্দ সম্পর্কে পর্যবেক্ষকরা আরেকটি সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। আর তা হচ্ছে, যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান রাজপরিবারের ভেতরে ও বাইরে নিজের বিরোধীদের দমন করার জন্য নিজেই এই কৌশল অবলম্বন করেছেন। এই ঘটনাকে অজুহাত করে এখন তিনি তার রাজসিংহাসনে বসার পথের সব কাঁটা অপসারণ করবেন। গোলাগুলির ঘটনার দায় বিরোধীদের উপর চাপিয়ে দিয়ে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।
বিডি২৪লাইভ/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: