‘বিড়ি শিল্পের শ্রমিকদের বেকার করতে দেয়া হবে না’
২০ লাখ বিড়ি শ্রমিক ও ১০ লাখ তামাক চাষিকে বেকার করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেছেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা। বলেছেন, ‘বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে বিড়ি শিল্প ধ্বংস করা হলে সারাদেশে আন্দোলনে নামবেন তারা।’
শনিবার (১৯ মে) রাজধানীর ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে আয়োজিত বাংলাদেশ বিড়ি-শ্রমিক প্রতিনিধি সম্মেলনে নেতারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
জাতীয় ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ (আরডিসি) এবং বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হকের। কিন্তু তিনি অনিবার্য কারণবশত উপস্থিত হতে পারেননি।
তবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাত্মতা ঘোষণা করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই সম্মেলনের সঙ্গে আমি একাত্মতা ঘোষণা করছি। সংসদে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করবো।’
প্রতিনিধি সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের প্রাক্তন সভাপতি মনজুরুল আহসান খান। তিনি বলেন, ‘সেই পাকিস্তান আমল থেকে আমরা বিড়ি শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। শ্রমিকদের এই ন্যায্য আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’
বিড়ি-শ্রমিক প্রতিনিধি সম্মেলনে সংহতি বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এবং বাংলাদশে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলুল হক ও কবি কাজী রোজী।
সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আরডিসির চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল। তিনি বলেন, ‘বিকল্প ব্যবস্থা না করে বিড়ি শিল্প ধ্বংস করা যাবে না। বিড়ি সিগারেট দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বন্ধ করতে হলে দুটিই একসঙ্গে বন্ধ করতে হবে।’
সভা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ বিড়ি-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি। বাজেটের আগে সরকারের পক্ষ থেকে ট্যাক্স কমানোর ঘোষণা দাবি করেন তিনি। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম কে বাঙালি, যুগ্ন-আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক হারিক হোসেনসহ বিডি শ্রমিক প্রতিনিধি ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
রংপুরে আগামী ২৪ তারিখে বৃহৎ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ, ধর্মঘটের কথা জানান তারা।
প্রতিনিধি সম্মেলনে সিরাজগঞ্জের কিসমত বিড়ি, রংপুরের হরিণ বিড়ি, মায়া বিড়ি, ময়মনসিংয়ের মোহিনী বিড়ি, নবাব বিড়ি, টাঙ্গাইলের হক বিড়ি ও মন্টু বিড়ি, ভৈরবের পঁচা বিড়ি, কনিকা বিড়ি, বরিশালের কারিগর বিড়ি, পাজ্ঞা বিড়ি, খুলনার গোপাল বিড়ি, সোনালি বিড়ি, যশোরের মাসুদ বিড়ি, আকিজ বিড়ি, আজিজ বিড়ি, গাইবান্ধার লাটিম বিড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহিন বিড়ি, মাদারিপুরের শ্রমিক বিড়ি, বগুড়ার শরীফ বিড়িসহ সারাদেশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
প্রতিনিধি সম্মেলনে উত্থাপিত দাবিগুলো
দুই বছরে বিড়ি বন্ধ করা ও ২২ বছরে সিগারেট বন্ধ করা অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অযৌক্তিক ও ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ- যা চরম বৈষম্যনীতি এবং তা অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
প্রতিহাজার বিড়ি শলকার ওপর ২৫২ টাকা ট্যাক্স প্রত্যাহার করে ভারতের মতো প্রতি হাজার বিড়ি শলাকায় ১৪ টাকা ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে। ভারতের মতো বিশ লাখ শলাকার নিচে বিড়ি উৎপাদন হলে সম্পূর্ণ ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে।
প্রতি হাজার বিড়ি তৈরির মজুরি ১০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে এবং ভারতের মতো বিড়ি শ্রমিকদের জন্য সরকার কর্তৃক বাৎসরিক ২টি অনুদান ও বাড়ি নির্মাণে এককালীন সাহায্য দিতে হবে।
সব বিড়ি ও তামাক চাষিদের জীবন জীবিকা, কর্মসংস্থান ও শিল্পের স্বার্থে একপেশে নীতি পরিবর্তন করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় স্ব-স্ব শ্রেণির প্রতিনিধিত্বে পরিকল্পিত নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের পূর্ব বিকল্প কর্মসংস্থান না করে বিড়ি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বন্ধ করা যাবে না। ২০ লাখ শ্রমিক ১০ লাখ তামাক চাষিকে বেকার করা চলবে না।
বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: