এসেছে উৎসবের ঋতু হেমন্তকাল
মনে পড়ে গেলো সুফিয়া কামালের হেমন্ত কবিতাটি। সবুজ পাতার খামের ভেতর, হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে। কোন পাথারের ওপার থেকে আনল ডেকে হেমন্তকে? কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই দু মাস নিয়ে হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই শিশির স্নাত প্রহর। শরতের কাশফুল মাটিতে নুইয়ে পড়ার পরপরই হেমন্তের আগমন ঘটে।
এর পরে আসে শীত, তাই হেমন্তকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস। হেমন্তের সকাল বেলা আবছা কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারিদিকের মাঠ-ঘাট। সকালে ধান গাছের ডগায় যে শিশির জমে থাকা তা হেমন্তের জানান দেয়।
গাছের নরম-কচি পাতাগুলোর ফাঁকে ফাঁকে মিষ্টি রোদ আর সুনীল আকাশ যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। হেমন্তের রাতে মেঘমুক্ত আকাশে জোৎস্নার আলো যেন অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি ঠিক করে পড়ে। আর এই সময়ে হালকা শীত অনুভূত হয়।
ধান উৎপাদনের ঋতু হলো এই হেমন্ত। বর্ষার শেষ দিকে বোনা আমন ও আউশ শরতে বেড়ে ওঠে। আর হেমন্তের ধান পরিপক্ক হয়, আর তখনই ধান কাটার উপযোগী হয়। আর এই হেমন্তে শুরু হয় কৃষকের ঘরে ফসল তোলার প্রস্তুতি।
হেমন্তের শেষের দিকে কাস্তে হাতে কৃষকরা মাঠে মাঠে আমন ধান কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর নতুন ফসল দেখে কৃষকের মুখে ফুটে ওঠে হাসি। আবহমান বাংলার শস্যভিত্তিক বড় মাপের একটি লোক উৎসব হল নবান্ন। নবান্ন অর্থ-নব নতুন আর অন্ন ভাত। হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের সূচনা হয় নবান্নের উৎসব।
গ্রামাঞ্চলে ফসল তোলার সাথে সাথেই নতুন চালের ফিরনি-পায়েশ অথবা ক্ষীর তৈরি করে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়। নবান্নে মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ আনা হয়। হেমন্তকে তাই উৎসবের ঋতু বললেও ভুল হবে না।
হেমন্তে শিউলী, কামিনী, গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেব কাঞ্চন, হিমঝুরি, ধারমার, রাজ অশোক ইত্যাদি নানা ধরনের ফুল ফুটে। হেমন্তের সকালে শিউলির সৌরভ বাঙালির প্রাণে আনে উৎসবের আমেজ। হাসিতে প্রাণোজ্জল থাকে সকলের প্রাণ।
হেমন্তে বিভিন্ন ধরনের ফলের সমারোহ ঘটে হেমন্তের দুটি বিশিষ্ট ফল হল কামরাঙা ও চালতা। নারিকেল এ ঋতুর প্রধান ফল। গৃহিণীর পিঠার তালিকায় থাকে নারিকেলে তৈরি রকমারি মুখরোচক খাবার। মহিলারা সারা রাত জেগে পিঠা তৈরি করে, আর সে কষ্ট আনন্দময় হয়ে ওঠে সকালে তা পড়শিদের মাঝে বিতরণ করে।
বিডি২৪লাইভ/এমকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: