শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে ঐক্যফ্রন্ট

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৪ এএম

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে পত্রিকার সম্পাদকদের সহযোগিতা চেয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা এবং সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যেসব সহযোগিতা দরকার, তার সবই সম্পাদকদের কাছে চাওয়া হয়েছে।

ড. কামাল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের যেমন কর্তব্য আছে, আমরা যারা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, যারা নির্বাচন করতে যাচ্ছি, তাদেরও কর্তব্য আছে। দলগুলোকে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে যেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। 

তিনি বলেন, সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে কি কি জিনিস দেখেছেন। সম্পাদকরা মনে করেন এবার ঐক্যফ্রন্টের বিরত থাকতে হবে, সবাইকে সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করতে হবে যেন জনগণ সত্যিকার অর্থে নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, নির্বাচন সত্যিকার অর্থে অবাধ ও নিরপেক্ষ যেন হয় সেটাই তাদের লক্ষ্য। এটাকেই তারা সত্যিকার অর্থে মূল্যবান মনে করেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সেই চেষ্টা থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, সরকারের আচরণের বিভিন্ন দিক তারা চিহ্নিত করেছেন। ঐক্যফ্রন্ট আশা করে সংবাদপত্র এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখবে।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ধন্যবাদ জানান বৈঠকে অংশ নেওয়া সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে তারা ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছে স্পষ্টভাবে জানতে চেয়েছেন, নির্বাচনে তারা থাকবেন কিনা। 

উত্তরে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, তারা নির্বাচনে থাকবেন। বৈঠকে সাংবাদিকরা কারও পক্ষ নিয়ে নয়, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে গণমাধ্যম অবশ্যই কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে জানান। নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আপত্তি থাকলে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কিংবা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বারবার বৈঠক করারও পরামর্শ দিয়েছেন কেউ কেউ।

সভায় দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ঐক্যফ্রন্টের যে জনসভাগুলো হয়, সেখানে আমি দেখেছি যে, পবিত্র কোরআন, বাইবেল, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। এগুলো তাদের ঐক্যবদ্ধ চিন্তার ফল কী না? এগুলোতে সবাই একমত কী না? এছাড়া আমি উনাদের কাছে জানতে চেয়েছি, ১৫ আগস্টে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্টের বিষয়ে কোন ঐক্যবদ্ধ চিন্তা আছে কী না?এগুলো নির্বাচনে আগে আমাদের সামনে লিখিতভাবে উপস্থাপন করবেন কী না?

তিনি জানান, আরেকটি প্রশ্ন ছিল, এই নির্বাচনের পর বাংলাদেশের দুটি বিশাল উদযাপন আছে। একটি হচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। আরেকটি হচ্ছে- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। নির্বাচনে বিজয়ী হোন বা পরাজিত হন- এই উৎসগুলো সকলে মিলে পালন করবেন কী না? এসব বিষয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেছেন, এগুলো বিষয়ে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবির, আমাদের নতুন সময় সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সাপ্তাহিক ২০০০ সম্পাদক গোলাম মুর্তজা, ভয়েস অব আমেরিকার ব্যুরো চিফ আমির খসরু, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, ইনকিলাবের যুগ্ম সম্পাদক মুন্সি আবদুল মান্নান, এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের যুগ্ম সম্পাদক আবু তাহের, বিডিনিউজের সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, যুগান্তরের চিফ রিপোর্টার মাসুদ করিম, সমকাল চিফ রিপোর্টার লোটন একরামসহ প্রমুখ।

এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ প্রমুখ মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: