বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের দিয়ে আমিরাতে দেহ ব্যবসা!

প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৫ এএম

গত বছর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের ভ্রমণ ভিসা সিথিল করেছে দেশটির সরকার। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের আমিরাতে নিয়ে যাচ্ছে অসাধু আদম ব্যবসায়ী ও নারী পাচারকারীদের একটি চক্র।

ইমিগ্রেশন ব্যুরোর ছাড়পত্রের ঝামেলা না থাকায় তারা বাংলাদেশি নারী শ্রমকিদের ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে আমিরাতে নিয়ে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত করতে বাধ্য করছে।

সম্প্রতি ভুক্তভোগী কয়েকজন বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে এবং তিনটি ঘটনায় এর সুষ্পষ্ট প্রমাণও মিলেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাতের তত্ত্বাবধানে বরগুনার সরোয়ার নামে দালাল চক্রের এক সদস্য আটক করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার এক নারী শ্রমিক (পাসপোর্ট নং- বিএক্স ০৫১৩২৬০) গত বছরের ৭ নভেম্বর ভ্রমণ ভিসায় দুবাই যান। স্থানীয় বাংলাদেশি দালাল চক্র তাকে এয়ারপোর্ট থেকে নিয়ে দুবাইয়ের একটি ফ্ল্যাটে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতে বাধ্য করেন। সেখান থেকে কোনোভাবে পালিয়ে দুবাই কনস্যুলেটে এসে দেশে ফেরার সাহায্য চাইলে তাকে আর্থিক, মানসিক ও দাফতরিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। পরে গত বছরের ১৫ নভেম্বর তাকে দেশে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত দালাল চক্রের মূলহোতা সরোয়ারকে আটক করা হয়।

একইভাবে গত বছরের ১০ অক্টোবর ও ১৪ নভেম্বর নেত্রকোনার দুই নারী শ্রমিক দুবাই পৌঁছালে দালাল চক্র একই কায়দায় ভিন্ন ভিন্ন ফ্ল্যাটে তাদের ভয় দেখিয়ে অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করে। সেখান থেকে তারা অন্যের সাহায্যে পালিয়ে এসে দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ দুজনকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

এই বিষয়ে কথা হলে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কনসাল জেনারেল ইকবাল হোসাইন খান বলেন, ‘মূলত নারী শ্রমিকদের ভিসার জন্য ইমিগ্রেশনে আবেদন করলে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ব্যুরোর ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ভিজিট ভিসার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ও ছবি দিয়েই ভিসা বের করে নেওয়া সম্ভব। এতে করে দালাল চক্র বাসা-বাড়ি, পার্লার, কফি হাউজে কাজ দেওয়ার কথা বলে নারী শ্রমিকদের আমিরাতে নিয়ে আসে। পরে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করে। যারা পালিয়ে এসেছে আমরা তাদের সবাইকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’

ইকবাল হোসাইন খান আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় দালাল চক্রের এক সদস্য সরোয়ারকে বুধবার আটক করা হয়েছে। আটক প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিকদের দালালদের ফাঁদে পা না দিয়ে আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি তাদের আমিরাতে পাঠানোর ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন আইন আরও কঠোর করার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: