প্রথমবারের মত প্রতিমন্ত্রী হওয়া কে এই আলোচিত এনামুর রহমান?

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৭:২৭ পিএম

মো. এনামুর রহমান। সদ্যগঠিত নতুন সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক এবং এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান। অন্যদিকে তিনি এনাম মেডিকেল হাসপাতাল (প্রাঃ) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এনাম এডুকেশন অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিলেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

মোঃ এনামুর রহমান ১৯৫৮ সালের ৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন তিনি। সেসময় তাঁর কর্মস্থল ছিল সাভার। পরবর্তীতে তাঁকে গোপালগঞ্জ জেলায় বদলি করা হলে চাকরি ছেড়ে দেন এনামুর।

এরপর ১৯৯২ সালে সাভারে ফিরে আসেন এবং এনাম ক্লিনিক নামে ৬ শয্যা বিশিষ্ট একটি ছোট ক্লিনিক গড়ে তোলেন এনামুর রহমান। ২০০৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়লে আহতদের তিন মাস বিভিন্ন পর্যায়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আলোচিত হয় এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ও এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. এনামুর রহমান। পরবর্তীতে তৎকালীন সাংসদ মুরাদ জংয়ের পরিবর্তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক তিনি ঢাকা-১৯ আসনের দশম জাতীয় সাংসদ হিসেবে মনোনয়ন পান এবং নির্বাচিত হন।

এরপর সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েও তিনি বিজয়ী হন। নির্বাচন কমিশনের ফলাফল অনুযায়ী, মো. এনামুর রহমান পান ৪ লাখ ৯০ হাজার ৪’শ ২৭ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫’শ ৬৬ ভোট।

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের উদ্দেশ্যে বঙ্গভবনে যাওয়ার আগে ডা. এনামুর রহমান দলীয় এবং জনসাধারণের কাছে ফেসবুকে অন্যরকম অনুরোধ করেন। যা পরবর্তীতে ভাইরাল হয়ে যায়। তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে আমার কিছু অনুরোধ-

★ অনূগ্রহপূর্বক আমাকে কোনো ক্রেস্ট, ফুলের তোড়া, নৌকা, রূপা বা পিতলের তৈরি নৌকার রেপ্লিকা, কোট পিন, কোন মানপত্র বা উপঢৌকন প্রদান করবেন না।

★ মানপত্রে লেখা থাকে, ‘হে মহান অতিথি, তোমার আগমনে ফুল, লতাপাতা, গুল্ম আজ আনন্দে আত্মহারা’ - এই ধরনের শব্দ ঢাহা মিথ্যা কথা। হাস্যকর। মানপত্রে যেসব তোষামোদপূর্ণ বাক্যের বর্ণনা থাকে তার ৯৫ ভাগই মিথ্যা, ভিত্তিহীন।

★আমার জন্য রাস্তায় শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। একেবারেই না।

★কোথাও কোনো শিক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখলে আমি সেই অনুষ্ঠান বয়কট করব এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করব।

★কোনো প্রতিষ্ঠান, সমিতি বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ‘পাবলিক মানি’ ব্যয় করে আমাকে স্বাগত জানিয়ে কোনো গেট বা তোরণ নির্মাণ করা যাবে না।

★কোন অনিয়ম বা অবৈধ কাজের তদবির করা যাবে না।

★কোন অনুষ্ঠানে অযথা বিপুল অর্থ ব্যয় করে স্টেজ বানাবেন না। অনূগ্রহপূর্বক কৃচ্ছতা সাধন করবেন। অযথা অর্থের অপচয় থেকে বিরত থাকবেন।

★অনূগ্রহপূর্বক কোন অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের নামে শিক্ষার্থী বা জনগণের টাকায় রকমারি খাবারের আয়োজন করা যাবে না।

মনে রাখবেন, আমি আপনাদের সেবক। জনগণের দয়ায় নির্বাচিত প্রতিনিধি। আপনারা সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে আমাকে সংসদে পাঠিয়েছেন বলেই আমি আজ প্রতিমন্ত্রী। দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে শপথগ্রহণ করেছি। আপনারা আমার জন্যে দোয়া করবেন। আমি যেন আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে পারি।’

বিডি২৪লাইভ/এসএইচআর/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: