বিএনপি গাদ্দার দল, আমি পদত্যাগ করলাম

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০১৯, ০৭:৩১ পিএম

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল সিলেট জেলা শাখার শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী ইকবাল, গাদ্দার রাজনৈতিক দল আখ্যা দিয়ে বিএনপির পদ ও দলের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

সারাদেশে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি নেত্রী ফেরদৌসী ইকবাল।

দলীয় নির্দেশ অমান্য করায় দল থেকে বহিষ্কার হলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ী কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও আসতে পারেননি ফেরদৌসী ইকবাল। চতুর্থ অবস্থানে থেকে প্রজাপতি প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ২২৮ ভোট।

এই নির্বাচনে যারা তাকে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ফেরদৌসী ইকবাল। একই সঙ্গে বিএনপির ভোটাররা তাকে একটি ভোটও দেননি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।

সেখানে তিনি ‘গাদ্দার’ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে আফসোস করেন। বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুঁটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই। ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেরদৌসী ইকবাল বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, যারা আমাকে ভোট দেননি তাদের সবার কাছে আমি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। এবারের নির্বাচনে আমিসহ যারা বিএনপির প্রার্থী ছিলাম তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের একটা ভোটও পাইনি। যে ভোটগুলো পেয়েছি, সেগুলো উপজেলার সাধারণ মানুষ দিয়েছে।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, দিন শেষে মনে হয়েছে, আমি ভুল কিংবা গাদ্দার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমি ভুল পথে আমার শ্রম দিয়েছি। শুধু দলীয় ভোটগুলো পেলেই আমি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তা আর হলো না। কাজেই স্বেচ্ছায় উপজেলা ও জেলার সব রাজনৈতিক পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম।

তার এই স্ট্যাটাস দেয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে ১১৪টি কমেন্ট ও ২০৮টি লাইক পড়েছে। স্থানীয় বিএনপি কর্মী তাজরিয়ান আহমেদ রিয়াজ কমেন্ট করেছেন, ‘আপা অনেক সময় আছে, আরও বড় হতে পারবেন। শুধু কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যারা সাধারণ কর্মী বা আপনারা নেতা-নেত্রী আছেন, আপনাদের জন্য এই যুদ্ধ একটি পরীক্ষা মাত্র।’

সজীবুর রহমান সজীব নামের একজন কমেন্ট করেছেন, ‘আমি মহিদপুর এলাকার মানুষ, আমরা আপনাকে ভোট দিয়েছি এই বলে যে আপনি জাতীয়তাবাদী দলের লোক। তাহলে আমরা কি করেছি।’

মহসিন রাজা নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘ফেরদৌসী আপা, আপনি হয়তো রাগে বা অভিমানে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আপনার অনেক ধারণাই হয়তো ভুল। ৭২ হাজার ভোটের মধ্যে ১০-১২ হাজার ভোটে সবাই পাস করেছেন। তার মানে বিএনপির বড় একটা অংশ ভোট দিতেই কেন্দ্রে যাননি। এছাড়া দল যেহেতু অনুমতি দেয়নি সেহেতু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি। তারপরও যারা ভোট দিয়েছেন অবশ্যই আপনাকে ভোট দিয়েছেন, দু-একজন ছাড়া। যার সাক্ষী আমি নিজেই। আপনি মানিককোনা কেন্দ্রের ফলাফল দেখুন। আমাদের আশা এবং বিশ্বাস, দু-একদিন গেলে এসব মন থেকে মুছে ফেলে দেশনেত্রীর মুক্তির মিছিলে আবারও সক্রিয় হবেন আপনি।

দল থেকে পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী ইকবাল বলেন, দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরও আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াইনি। আমার বিশ্বাস ছিল দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আমাকে ভোট দেবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ভোট দেননি। যদি তারা ভোট দিতেন আমি জিতে যেতাম। তাই স্বেচ্ছায় উপজেলা ও জেলার সব রাজনৈতিক পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম।

বিডি২৪লাইভ/এএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: