অ্যাডলফ হিটলার সম্বন্ধে অজানা কিছু তথ্য

প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০১৫, ০৫:৫৬ এএম

আবু সাঈদ:

অ্যাডলফ হিটলার, বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসে যে নামটি অতিসুপরিচিত। অ্যাডলফ হিটলার কারো কাছে চিরঞ্জীব বিশ্বনেতা আবার কারো কাছে অত্যন্ত কুখ্যাত এক খুনি! না আমরা কোন ইতিহাসের সত্য মিথ্যা বিশ্লেষণ করব না এই লেখাতে। আজ আমরা জানব হিটলার সম্বন্ধে এমন কিছু তথ্য যা অনেকেরই অজানা। তার আগে চলুন জেনে নিই অ্যাডলফ হিটলার সম্বন্ধে সাধারণ কিছু তথ্য।

এই বিশ্বনেতার জন্ম ১৮৮৯ সালের ২০ এপ্রিল অস্ট্রিয়াতে। এই জার্মান রাজনীতিবিদ যিনি ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশের ফিউরার ছিলেন।

হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ভাইমার প্রজাতন্ত্রে নাৎসি পার্টির নেতৃত্ব লাভ করেন। অভ্যুত্থান করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন যে কারণে তাকে জেল খাটতে হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মোহনীয় বক্তৃতার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ, ইহুদি বিদ্বেষ ও সমাজতন্ত্র বিরোধিতা ছড়াতে থাকেন। এভাবেই এক সময় জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। নাৎসিরা তাদের বিরোধী পক্ষের অনেককেই হত্যা করেছিল, রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজিয়েছিল, সামরিক বাহিনীকে নতুন নতুন সব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করেছিল এবং সর্বোপরি একটি সমগ্রতাবাদী ও ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল। হিটলার এমন একটি বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেন যাতে সকল "লেবেনস্রাউম" (জীবন্ত অঞ্চল) দখল করে নেয়ার কথা বলা হয়। ১৯৩৯ সালে জার্মানরা পোল্যান্ড অধিকার করে এবং ফলশ্রুতিতে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।

যুদ্ধের অক্ষ শক্তি তথা জার্মান নেতৃত্বাধীন শক্তি মহাদেশীয় ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু অবশেষে মিত্র শক্তি বিজয় লাভ করে। ১৯৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। ৬০ লক্ষ ইহুদিকে পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হয়। ইহুদি নিধনের এই ঘটনা ইতিহাসে হলোকস্ট নামে পরিচিত।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে হিটলার বার্লিনেই ছিলেন। রেড আর্মি যখন বার্লিন প্রায় দখল করে নিচ্ছিল সে রকম একটা সময়ে ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তিনি ফিউরারবাংকারে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন।হিটলার সম্বন্ধে এই তথ্যগুলো মোটামুটি সবারই জানা। এখন আমরা জানব ভিন্নধর্মী কিছু তথ্য।

*হিটলারের গোসল বা নগ্ন হওয়ার সময় কারো প্রবেশানুমতি ছিল না। তিনি কখনও কোন পারফিউম বা সুগন্ধি ব্যবহার করতেন না।

*যত গরমই লাগুক না কেন তিনি জনসম্মুখে কখনও তার ব্যবহৃত কোটটি খুলতেন না।

*১৯২৩ সালে নাজি প্রেস সেক্রেটারি ড. সেজুইক হিটলারকে ছোট গোঁফ স্বাভাবিকভাবে বড় করার জন্য উৎসাহ দিয়েছিলেন। গোঁফ বড় করার বিষয়ে হিটলারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। প্রতিউত্তরে হিটলার বলেছিলেন, ‘আমার গোঁফ নিয়ে উদ্বিগ্ন হইও না, যদিও এই ছোট গোঁফ এখন ফ্যাশন না, তবে পরবর্তীতে এটাই ফ্যাশন হয়ে যাবে’।

*শারীরিক ওজন ছিল ১৫৫ পাউন্ড আর উচ্চতায় ছিলেন ৫ ফিট ১০ ইঞ্চি।

*খেলাধুলা কিংবা কোন ধরনের শরীরচর্চার ওপর হিটলারের কোন আকর্ষণ ছিল না। তিনি এগুলো করতেন না। তবে তিনি মাঝে মাঝে হাঁটাহাঁটি করতেন।

*তিনি তার নিজ কক্ষে কর্নার থেকে কর্নার আড়াআড়িভাবে একই গতিতে হাঁটাহাঁটি করতেন।

*হিটলারের হাতের লেখা ছিল একেবারে নিখুঁত। ১৯৩৭ সালে বিখ্যাত মনস্তাত্ত্বিক কার্ল জাং হিটলারের একটি লেখা দেখে মন্তব্য করেন- এই হাতের লেখা দেখে আমাকে স্বীকার করতেই হয় যে এটা মেয়েলী প্রকৃতির।

*হিটলারের বিনোদনের জন্য তার অধীনস্থ কর্মচারীরা সঙ্গোপনে রাজবন্দীদের নির্যাতন ও তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভিডিওচিত্র দিয়ে চলচ্চিত্র বানাতেন। বলাই বাহুল্য, এ ধরনের চলচ্চিত্র বেশ উপভোগ করতেন তিনি। হিটলারের নির্বাহী সহযোগী কর্মকর্তারা তার জন্য পর্নো ও চলচ্চিত্রও সংরক্ষণ করে রাখতেন।

*‘অ্যামেরিকান কলেজ’ ফুটবলে যে ধরনের মিউজিক ব্যবহার করা হয়, সাধারণ আম-জনতার মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে হিটলার তার বক্তৃতার সময় সে ধরনের মিউজিক ব্যবহার করতেন। অ্যামেরিকান ফুটবলের চিয়ারলিডাররা দর্শকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য যে কৌশল অনুসরণ করতো, সেই একই কৌশল অবলম্বন করে সভা-সমাবেশে ‘সিয়েগ হেইল!’ বলে শ্লোগান দিয়ে দর্শকদের উজ্জীবিত করতেন হিটলার।-তথ্যসুত্র: উইকিপিডিয়া, ওয়েবসাইট।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: