‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ এর ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৮ মার্চ ২০১৫, ০৫:৫৭ পিএম

আন্তর্জাতিক নারী দিবস বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশেই পালন করা হয়। ৮ই মার্চ নারীদের সফলতার স্বীকৃতি দেয়া হয়। কোন জাতিগত, ভাষাগত, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক গত দিক থেকে নয়। নারীদের নিজস্ব অর্জনের দিক বিবেচনা করে এই দিনের স্বীকৃতি দেয়া হয়। সর্বপ্রথম বিংশ শতাব্দীতে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে মহিলা শ্রমিকদের কার্যকলাপের ভিত্তিতে এই দিনের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উন্নত ও অনুন্নত দেশের মহিলাদের জন্য একটি নতুন বিশ্ব মাত্রা অধিকৃত করেছে। বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের নারী সম্মেলন দ্বারা, আন্তর্জাতিক নারী আন্দোলন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

কালপঞ্জিঃ
# ১৯০৯
প্রথম জাতীয় নারী দিবস ২৮ ফেব্রুয়ারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালন করা হয়। আমেরিকার সমাজতান্ত্রিক দল পোশাক শ্রমিকদের ১৯০৮ সালের ধর্মঘটের সম্মানে এই দিনটি মনোনীত করেন।

# ১৯১০
কোপেনহেগেন এ আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সভায় নারী দিবস প্রতিষ্ঠিত করা হয়। মহিলাদের সর্বজনীন ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং নারী অধিকারের জন্য আন্দোলনের সম্মান করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে একটি নারী দিবস পালন করার প্রস্তাব দেয়া হয়। ফিনিশ পার্লামেন্ট এ ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারীকে বাছাই করা হয় যেখান থেকে তিন জন নারী নির্বাচিত করা হয়। তবে নারী দিবস কোন দিন পালন করা হবে এই বিষয়ে সেদিন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হইনি।

# ১৯১১
কোপেনহেগেনের উদ্যোগের ফলে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের উদ্দেশ্যে আস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ড এ ১৯শে মার্চ প্রায় এক লাখ নারী ও পুরুষ র্যা লি করেন। এই র্যািলিতে তারা নারীদের জন্য ভোটাধিকার ছাড়াও পাবলিক অফিসে চাকরীর সুযোগ, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের উপর নারীদের নিয়ে যে বৈষম্যতা রয়েছে তা দূর করতে বলা হয়েছে।

# ১৯১৩-১৪
আন্তর্জাতিক নারী দিবস শান্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিবাদী একটি প্রক্রিয়া অংশ হিসেবে গড়ে ওঠে। রাশিয়ান নারীরা তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেন ফেব্রুয়ারীর শেষ রবিবারে। পরের বছর থেকে ইউরোপের অন্যত্র দেশগুলোতে ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। মহিলারা র্যা লি করেন নারী সমাবেশের যুদ্ধ প্রতিবাদ বা অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে।

# ১৯১৭
যুদ্ধের প্রতিবাদে রাশিয়ান নারীগণ “ব্রেড ও শান্তি” নামে একটি ধর্মঘট শুরু করেন। তারা ফেব্রুয়ারীর শেষ রবিবারে ধর্মঘটটি পালন করেন। যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৮ই মার্চ হয়। ৪ দিন পর সেখানে নারীদের ভোট দেয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়।

# ১৯৭৫
আন্তর্জাতিক নারী বছর থেকেই জাতিসংঘ ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উৎযাপন করা শুরু করেন।

# ১৯৭৭
নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট দিন ঠিক করার প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহীত হয়। ঐতিহাসিক ও জাতীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী বছরের কোন একটি দিন পালন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

# ১৯৯৫
বেইজিং একটি ঘোষণা করেন, যেখানে ১৮৯ জন সরকার একটি ঐতিহাসিক রোডম্যাপ এ স্বাক্ষর করেন, ১২টি সমালোচনামুলক যায়গা নিয়ে। যেন সেই এলাকার মেয়েরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন, পছন্দমত ব্যায়াম করতে পারেন, পড়াশুনা করতে পারেন, চাকরী করতে পারেন এবং সমাজে সহিংসতা ও বৈষম্য মুক্ত হতে পারেন।

# ২০১৪
নারীদের অবস্থা নিয়ে কমিশনের ৫৮ তম অধিবেশনে লিঙ্গ সমতা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। জাতিসংঘের সত্ত্বা ও সারা বিশ্ব থেকে স্বীকৃত এনজিও আট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অগ্রগতি স্টক এবং অবশিষ্ট চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। এমডিজি নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ইউনাইটেড নেশন এর সদস্যগণ ১৯৪৫ সাল থেকে পুরুষ এবং নারীদের মাঝে সমতা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বছরের পর বছর পালাক্রমে এর উন্নতি সাধিত হচ্ছে।–সূত্র: ইউএন।

সম্পাদনা: আরজু।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: