আসছেন বাংলাদেশের ক্রিস গেইল

‘ক্রিস গেইল’ নামটি শুনলেই প্রথমেই ভেসে আসে দানবীয় ব্যাটিংয়ের কথা। দৈতকায় শরীরের সাথে খুনে ব্যাটিয়ের চূড়ান্ত উদাহরন এই ক্যারিবীয়ান সুপারস্টার। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্র্যাডম্যান বললেও ভুল হবে না। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে একজন ব্যাটসম্যানের জন্য পুরো ক্যারিয়ারে একটি কিংবা দুটি সেঞ্চুরি থাকা অনেক বড় অর্জন হিসেবে ধরা হয়। সেখানে ক্রিস গেইল একাই করেছেন ১৭ টি সেঞ্চুরি!
অবিশ্বাস্যই বটে। একদিনের ক্রিকেটে যেখানে দেড়শ পেরানো ইনিংসকে দেয়া হয় বিগ স্কোরের মর্যাদা সেখানে মাত্র ২০ ওভারের খেলাতে ক্রিস গেইলের সর্বোচ্চ ইনিংস ১৭৫ রান! বিশ্বের যোকোন প্রান্তের খেলায় যেকোন দলই তাই ক্রিস গেইলকে পেতে মুখিয়ে থাকে। এতক্ষন ক্রিস গেইলকে নিয়ে এত কথার একটাই কারণ, তার ছক্কা মারার সহযাত সামর্থ্যকে আরও একবার স্মরন করিয়ে দেয়া।
সেই ক্রিস গেইলের মত একজন ব্যাটসম্যানকে যদি পাওয়া যেত বাংলাদেশে কেমন হতো? নিশ্চয়ই অসাধরণ। একদিনের ক্রিকেটে টাইগাররা এখন বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত শক্তি। নিজেদের মাঠে যেকোন দলকে হারিয়ে দিতে পারে অনেকটা বলে কয়েই। জিতে নিতে পারে সিরিজই। কিন্তু টি টোয়েন্টিতে কিসের যেন একটা অভাব লক্ষ্য করা যায়। কারণটা সবারই জানা। ব্যাটিং তান্ডব চালানোর মত তেমন কোন ব্যাটসম্যান নেই। একটা সময় তামিম ইকবাল অনেকটা তেড়ে ফুরে ব্যাটিং করতে পারত। কিন্তু সময়ের সাথে সেই তামিমের কাছ থেকেও সেই খুনে ব্যাটিংটা আর দেখা যায় না।
যেকারণে টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীরা খুঁজছেন একজন খুনে ব্যাটসম্যানকে। হ্যা আমি টি-টোয়েন্টির কথাই বলছি। সাথে সবাইকে সন্ধান দিচ্ছি একজন বাংলাদেশি ক্রিস গেইলের । অনেকেই তুলনাটাকে বাড়াবাড়ি হিসেবে দেখতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তর্কাতর্কিভাবে তিনিই হতে পারেন ক্রিস গেইল। চেহারা ও ব্যাটিংয়ের ধরন অনেকটা ক্রিস গেইলের মতই। রয়েছে অবলিলায় ছক্কা মারার সহজাত সামর্থ্য।
খেলছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও। ২০১৪ সালে আন্ত: বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটে ১২৭ মিটার ছ্ক্কা মেরে প্রথম নজরে আসেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের। তার রেফারেন্সেই সেবছর ওল্ড ডিওএইচএস দলে সুযোগ পান। নিজের অভিষেক ম্যাচেই জাতীয় দলের পেসার মোহাম্মদ শহীদকে ছক্কা মেরে লিস্ট এ ক্রিকেটে নিজের রানের খাতা খুলেন। এরপরের ম্যাচে ফর্মের তুঙ্গে থাকা সাব্বির রুম্মানকে গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে ছিলেন শুন্য রানেই। পরপর দুই বলে দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করে জাগিয়েছিলেন হ্যাট্রিকের সম্ভাবনাও। সেটা না হলেও ৭ ওভারে ২১ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নিয়ে জানান দিয়েছেন নিজের বোলিং সামর্থ্যের কথাও।
গতবাধা নিয়ম অনুসরণ করলে হয়ত নিকট ভবিষ্যতে জাতীয় দলের আশে পাশে আসার সুযোগ নেই। কিন্তু যদি বিগ হিটিং অ্যাবিলিটিকে বিবেচেনায় এনে টি-টোয়েন্টির কথা ভাবা হয় তাহলে খুব সহজেই বিসিবির হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রামে সুযোগ পেতে পারেন। ২০১২ সালে ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ২৫ টি ছক্কা মেরে হয়েছিলেন টুর্নোমেন্টের সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানো ব্যাটসম্যান। সেবছরই ধানমন্ডি প্রগতির বিরুদ্ধে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। যার অর্থ ব্যাট এবং বল দুটোতেই সমান পারদর্শি তিনি। আর টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন অলরাউন্ডারই যে প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটে টি টোয়েন্টিতে তার রয়েছে ৫ টি শতক। যার মধ্যে রয়েছে মাত্র ১৭ বলে অর্ধশতক ও ৪৫ বলে সেঞ্চরি করার রেকর্ডও।
ক্রিকেটে তার পথ চলা শুরু হয় ২০০৬ সালে। নিলফামারী অনূর্ধ্ব -১৮ জেলা দলের হয়ে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ক্যারিয়ার শুরু করেন। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নিজের অভিষেক ম্যাচে ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৩৭ রান করে হয়েছিলেন দলের পক্ষে টপ স্কোরার। দুর্দান্ত নৈপুন্য দেখিয়ে ২০০৮ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই সুযোগ পেয়ে যান নিলফামারী জেলা দলে। খেলে ফেলেন ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপও।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। লেখা পড়া করছেন আইইআর সম্মান শেষ বর্ষে। গেইলের মতই সারাক্ষন দুষ্টোমি করতে ভালোবাসেন। মাঠে যেমন ব্যাটিং দিয়ে বড় বড় ছক্কা হাঁকিয়ে বিনোদন দেন মাঠের বা্ইরে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন মজার মজার কথা বলে। বর্তমানে নিজেকে প্রস্তুত করছেন আসছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের জন্য। ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় মাঠে নিয়মিত ব্যাটিং বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিটনেস ঠিক রাখতে করছেন নিয়মিত জিমও।
খালেদ মাহমুদ সুজনের পর বাংলাদেশ পায়নি আর কোন প্রতিষ্ঠিত পেস বোলিং অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় সেই অভাব দুর করার সবটুকু সামর্থ্যই আছে আল আমিন সিদ্দিক সুজনের। দরকার শুধু বিসিবির দৃষ্টি আকর্ষন। বিসিবির হাইপারফরম্যান্স প্রোগ্রামে সুযোগ পেলে উন্নত সুযোগ সুবিধা সবকিছু মলিয়ে নিজেকে খুব সহজেই আরও শানিত করতে পারবেন তিনি। আর সেটা হয়ে গেলে বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছে ক্রিস গেইল ধাচের একজন ক্রিকেটারকে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: