দল বদল করার সময় জানাল ইসি
কোন রাজনৈতিক জোট ভাঙ্গা-গড়া করতে হলে আগামী দেড় সপ্তাহের মধ্যে করতে হবে। এমন নির্দেশনা দেয়ার জন্য একটি চিঠি প্রস্তুত করেছে ইসি।
ইসি সূত্র জনায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তিন দিন পর পর্যন্ত চলবে নির্বাচনী জোট ভাঙা-গড়ার খেলা। কেননা নিবন্ধিত দলের নিবাচনী জোটের স্বীকৃতি নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে তফসিল ঘোষণার তিন দিনের মধ্যে। এর মধ্যে চাইলে যে কোনো জোটে তরী ভেড়াতে পারবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল।
তবে অনিবন্ধিত দল জোটে থাকলেও ভোটের মাঠে তাদের পরিচয় থাকবে না, নিজ দলের নাম বিসর্জন দিয়েই অন্য নিবন্ধিত দলের প্রতীক নিয়ে ভোটে যেতে হবে।
আগামী ১ নভেম্বর বিকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে নির্বাচন কমিশন। সাক্ষাতের পরে যে কোনো দিন তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। ৫ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা। সেই হিসাবে জোট ভাঙা-গড়ার সময় থাকবে দেড় সপ্তাহ।
সব মিলে জোটের স্বীকৃতি দিতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় পাবে রাজনৈতিক দলগুলো। আর ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিলের ঘোষণার কথা জানিয়েছে ইসি।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরুর পর এখন অনিবন্ধিত কোনো দল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। তবে নিবন্ধিত দলের সঙ্গে জোট বেঁধে তাদের প্রতীক (মার্কা) নিয়ে অনিবন্ধিত দলের প্রার্থীও ভোট করতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনিবন্ধিত দলের ওই প্রার্থী কাগজে কলমে মনোনয়নদাতা নিবন্ধিত দলের প্রার্থী হিসেবেই গণ্য হন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের আগে জোটের পরিসর বাড়িয়ে ভোটের মাঠ চাঙা রাখতেই বড় দলগুলো ছোট দলগুলোকে কাছে টানে। নিবন্ধন থাক বা না থাক, কর্মী-সমর্থক যত কমই হোক, জোটের রাজনীতির মূলকথা হলো দল ভারী দেখিয়ে ভোটারদের নজর কাড়া।
জোটের স্বীকৃতি তফসিলের তিন দিনের মধ্যে : নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানান, নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত দলের জোট হলে তাতে ইসির করার কিছু নেই। তবে নিবন্ধিত দলগুলো জোটভুক্ত হয়ে কোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে হলে কমিশনকে জানাতে হবে।
মূল দুই জোটে নিবন্ধিত দল ১৬টি : ইসিতে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জোটভুক্ত ১৬টি দল। এ ছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে রয়েছে বিএনপিসহ নিবন্ধিত ৩ দল। বাম গণতান্ত্রিক জোটে ৩ দল, এরশাদের সম্মিলিত জাতীয় জোটে ৩ দল। এ ছাড়া বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর রয়েছে যুক্তফ্রন্ট। এই হিসাবে ১৫টি দল কোনো জোটে নেই।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও মহাজোটে থাকা অন্য নিবন্ধিত দলগুলো হলো— বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল-এমএল, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি-জেপি। এক সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে থাকা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে ‘ইসলামী মূল্যবোধের’ ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’, সংক্ষেপে ইউএনএ গঠিত হয়েছে সম্প্রতি। এ জোটের শরিকদের মধ্যে ২ দলের নিবন্ধন রয়েছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে থাকা নিবন্ধিত অপর দলগুলো হচ্ছে— বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল-জাগপা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, খেলাফত মজলিশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। আরেক নিবন্ধিত দল বাংলাদেশ ন্যাপ সম্প্রতি এ জোট থেকে বেরিয়ে যায়। গত বছরের এপ্রিল মাসে বি চৌধুরীর বিকল্পধারা, রবের জেএসডি ও মান্নার নাগরিক ঐক্য মিলে গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট। বি চৌধুরী হন জোটের চেয়ারম্যান, মান্না হন সদস্য সচিব। শুরুতে আবদুল কাদের সিদ্দিকী এই জোটে থাকলেও পরে সরে যান।
অন্যদিকে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল কয়েক বছর আগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করেন, যার সদস্য সচিব হন মোস্তফা আমিন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে কিছু দাবিতে একসঙ্গে আন্দোলন চালাতে একমত হন বি চৌধুরী ও ড. কামাল। কিন্তু ১৩ অক্টোবর বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে এক জোটের ঘোষণা আসে। এই জোটের নাগরিক ঐক্যের নিবন্ধন নেই ইসিতে।
বিডি২৪লাইভ/এআই/এসএস
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: